ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

কালের কণ্ঠের ঈদ সংখ্যা ঘিরে লেখকদের প্রাণবন্ত আড্ডা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৮
কালের কণ্ঠের ঈদ সংখ্যা ঘিরে লেখকদের প্রাণবন্ত আড্ডা কালের কণ্ঠের ঈদ সংখ্যা ঘিরে লেখকদের প্রাণবন্ত আড্ডা। ছবি: বাংলানিউজ

দেশের খ্যতিমান কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের নিয়ে প্রাণবন্ত আড্ডা ও প্রীতি সম্মেলনের আয়োজন করে দৈনিক কালের কণ্ঠ।

শনিবার (০৯ জুন) কালের কণ্ঠের  ‘ঈদসংখ্যা-২০১৮’ ঘিরে ছিল এই আড্ডা ও ইফতারের আয়োজন।  

রাজধানীর বারিধারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ ভবনের সম্মেলনকক্ষে সমবেত লেখকরা কালের কণ্ঠের ঈদসংখ্যাটির গুণমান ও অঙ্গসৌষ্ঠবের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

পাশাপাশি লেখক-সাহিত্যিকেরা কালের কণ্ঠ পত্রিকার ভূমিকারও প্রশংসা করেন।

আড্ডা-আলোচনা, নির্মল হাস্যরস ও আবেগঘন স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে গোটা আয়োজনটি হয়ে উঠেছিল আনন্দমুখর ও প্রাণবন্ত। বিভিন্ন প্রজন্মের অনেক লেখক এক সঙ্গে মিলিত হতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। পরে উপস্থিত কবি, লেখক ও সাহিত্যিকেরা সদ্য প্রকাশিত ঈদসংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন।

লেখক-আড্ডার শুরুতেই শুরুতেই সবাইকে সবাইকে স্বাগত ও কৃতজ্ঞতা জানান কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও বরেণ্য কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন।

তিনি বলেন, ‘যানজট ও অন্যান্য কারণে শহরের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া অনেক কষ্টকর। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ অনেকের সঙ্গেই দেখা হয়ে গেলো। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এটি। ‘কালের কণ্ঠের ঈদ সংখ্যা ঘিরে লেখকদের প্রাণবন্ত আড্ডা।  ছবি: বাংলানিউজঈদসংখ্যার প্রকাশনা সম্পর্কে তিনি বলেন, কালের কণ্ঠ শুরু থেকেই সমৃদ্ধ ঈদসংখ্যা প্রকাশ করে আসছে। পাশাপাশি গত দুই বছর ধরে ঈদসংখ্যার প্রকাশনা উপলক্ষে লেখক-আড্ডার আয়োজন করছে। আমরা প্রতিবছরই চেষ্টা করি একটু অন্যরকম, একটু ব্যতিক্রমী ঈদসংখ্যা প্রকাশ করতে। লেখার মান ও বিষয় বৈচিত্র্যের দিকেও আমরা বিশেষ লক্ষ্য রাখি। এসবের পাশাপাশি উন্নত কাগজ, ঝকঝকে ছাপা এবং নান্দনিক ইলাস্ট্রেশন তো রয়েছেই। আশা করি, ঈদসংখ্যাটি পাঠকদের আনন্দ দিতে সক্ষম হবে।
   
কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ঈদ সংখ্যার প্রকাশনা ঘিরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হলো লেখকদের প্রীতি সম্মেলন। আমরা আশা করছি, এ আয়োজন অব্যাহত থাকবে। ’  

ঈদসংখ্যার প্রকাশনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ঈদসংখ্যাটিকে সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়েছে। বিষয় বৈচিত্র্যকে যেমন প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি রচনার মান ও সুসম্পাদনা বজায় রাখা হয়েছে। সংখ্যাটি উন্নত কাগজে সুবৃহৎ কলেবরে প্রকাশিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যতিক্রমী ও ভিন্নধর্মী একটি ঈদসংখ্যা প্রকাশের ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট ছিলাম। আশা করি, আমাদের প্রয়াস সার্থক হয়েছে।  

আলোচনায় অংশ নিয়ে কবি, লেখক ও সাহিত্যিকেরা জানান, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক দুইজনই বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক। দুজন সৃজনশীল লেখক একই পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে পত্রিকাটিতে ফুটে উঠেছে নান্দনিকতা ও যত্নের ছাপ। ফুটে উঠেছে সৃজনশীল নানা ভাবনা ও চিন্তার খোরাক। লেখক-সাহিত্যিকদের মধ্যে আজকাল এমন আড্ডা খুব কমই হয়। দেখা-সাক্ষাৎও হয় খুব কম। কালের কণ্ঠের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনেকের সঙ্গেই অনেকের দেখা হলো। শিল্প-সাহিত্য নিয়ে ভাব-বিনিময় হলো। পুরনো বন্ধুত্ব ও সখ্য-সংরাগ যেন জেগে উঠলো নব সান্নিধ্যের অমল ছোঁয়ায়। এটা খুবই আনন্দের বিষয়।

কবি কামাল চৌধুরী বলেন,  ‘ঈদসংখ্যার আয়োজনকে কেন্দ্র করে অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। সত্তর ও আশির দশকে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা হলো। ব্যক্তিগতভাবে তা সত্যিই আনন্দের বিষয়। ’ 

ঈদসংখ্যা সম্পর্কে তিনি বলেন,  ‘সব মিলিয়ে অত্যন্ত নান্দনিক ঈদসংখ্যা হয়েছে। মানসম্মত লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে। ’ 
তিনি কবি, লেখক, সাহিত্যিকদের নিয়ে একটি নিয়মিত আড্ডা আয়োজনের তাগিদ দেন।

কবি সানাউল হক খান বলেন,  ‘কালের কণ্ঠে নিয়মিত লিখি। পত্রিকাটি লেখকদের যথাযথ সম্মান দেয়। তারা শুধু যত্ন করে লেখা প্রকাশই করে না, লেখাটি ছাপা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখকসম্মানীও দেয়। ’

কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী বলেন, ‘অনেক পত্রিকায় ঈদসংখ্যা প্রকাশ করেন। কিন্তু এতো ভালো কাগজের ঈদসংখ্যা আর একটিও নেই। তার উপর আড্ডায় এসে লেখক সম্মানীটা নগদে পেয়ে যাওয়াটাও বাড়তি পাওনা। ’

কবি আসাদ মান্নান বলেন,  ‘ইফতার ও আড্ডার মধ্য দিয়ে অনেকের সঙ্গে দেখা হওয়ার চমৎকার সুযোগ পাওয়া গেল। একটা প্রাণবন্ত গেট টুগেদার হয়ে গেল। বিষয় বৈচিত্র্যের দিক থেকে কালের কণ্ঠের ঈদসংখ্যা অন্যরকমই হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ নানা রচনা রয়েছে। আশা করি, পাঠকেরা উপকৃত হবে। ’

কবি মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘দুজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক পত্রিকাটির দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে পত্রিকাটিতে লেখকদের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। ঈদসংখ্যাটি অঙ্গসৌষ্ঠব ও বিষয়-বৈচিত্রে অসাধারণ হয়েছে। নান্দনিক হয়েছে। ’ 

তিনি কালের কণ্ঠের নিয়মিত সাহিত্যপাতাটি অন্তত তিন পৃষ্ঠা করার দাবি জানান।

কবি নাসির আহমেদ বলেন, ঈদসংখ্যায় পাঁচ তরুণের গল্প ছাপা হয়েছে। আমার বিবেচনায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এই পাঁচজনের মধ্যে একজনও যদি টিকে যান, তাহলে সেটা সাহিত্যের জন্য দারুণ এক সুখবর হবে।  

অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি মাকিদ হায়দার, কথাসাহিত্যিক মাসুদ আহমেদ, নাট্যকার ও গল্পকার ইসহাক খান, কথাসাহিত্যিক হাবিব আনিসুর রহমান, কবি মাশুক চৌধুরী, গবেষক ও শিশুসাহিত্যিক খন্দকার মাহমুদুল হাসান, কবি জুয়েল মাজহার, অনুবাদক ও প্রাবন্ধিক দুলাল আল মনসুর, কবি কামাল মাহমুদ, গবেষক ও স্থপতি শামীম আমিনুর রহমান, কথাসাহিত্যিক মোস্তফা মামুন, কথাসাহিত্যিক শাহনাজ মুন্নী, কবি ও কালের কণ্ঠের সাহিত্য সম্পাদক মাসুদ হাসান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, কালের কণ্ঠের ঈদসংখ্যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫১২। দাম ২০০ টাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৮
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।