কবিতা কী, কেন, অথবা কবিতার প্রয়োজনীয়তা কি এখনও টিকে আছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী। ‘এখনও কেন কবিতা’ শিরোনামের আলাপচারিতায় অন্য বরেণ্য কবিরাও সায় দেন তার মতে।
শনিবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় ও শেষ দিনে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তন কক্ষে কবিতা নিয়ে কথা বলতে বসেন অগ্রজ কবি আসাদ চৌধুরী, রুবি রহমান, পশ্চিমবঙ্গের সুমন গুণ এবং ড. নিখিলেশ রায়। সেশন পরিচালনা কবি শামীম রেজা।
‘ওগো নদী, আপন বেগে পাগলপারা, আমি স্তব্ধ চাঁপার তরু গন্ধভরে তন্দ্রাহারা’- রবীন্দ্রনাথে শুরু হওয়া আয়োজন শেষ হয় জীবনানন্দ দাসের ‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতা নিয়ে কথা বলতে বলতে। এর মাঝেই কবিরা তুলে ধরেন কবিতার রহস্য, প্রহেলিকা আর কবিতার ধাঁধা।
এ প্রসঙ্গে নিখিলেশ রায় বলেন, মনের সব আবেগ প্রকাশ করার জন্য কবিতা এক প্রকার গোপন ভাষা। অনেক সময় কবিতার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করার মাধ্যমে প্রতিবাদী কণ্ঠকে অনুভব করা ছাড়াও চারপাশের জীবন থেকে একটু ছুটি নেওয়া যায় কবিতার মাধ্যমেই।
এসময় দুঃখকেই কবিতার জননী বলে উল্লেখ করেন কবি রুবি রায়। আদিকবির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বেদনাহত বাল্মীকি আমাদের প্রথম কবি। কামমোহিত দু’টি কোঁচবকের একটি যখন শিকারির তীরে মৃত্যুবরণ করে, সেই মৃত্যু বেদনার জন্ম দেয় বাল্মীকির মনে। আর আদিকবি মনে সেই দুঃখ নিয়েই লিখে যান শ্লোক। তাই দুঃখই কবিতার জননী।
অপরদিকে কবিতা আমাদের জীবন থেকে সরিয়ে দিয়ে আবার জীবন ফিরিয়ে দেয়। আর পাঠ করার সময় পাঠক নিজেও লেখক হয়ে ওঠেন বলে জানান কবি সুমন গুণ। তিনি বলেন, কবিতা সিনেমা, গান বা গল্পের মতো তাৎক্ষণিক পরিবর্তন আনতে পারে না, কিন্তু যার কবিতা লেখার খিদে সে কবিতা লিখবেই এবং যার কবিতা পড়ার খিদে সে তা পড়বেই।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৮
এইচএমএস/এসএইচ