ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা’ ‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা’

চট্টগ্রাম: ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ১৪টি অধিবেশন সম্প্রচারের মাধ্যমে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ভূমিকা নিয়ে বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় চট্টগ্রামের বলাকা থেকে প্রকাশিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও কবি শামসুল আরেফীনের বই ‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা’। বইটি চট্টগ্রামের বইমেলাতেও পাওয়া যাচ্ছে।

বইটিতে বলা হয়েছে, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিনগত রাতে চট্টগ্রামের তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমদ চৌধুরীর পরিবারে আসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তা অবলম্বনে পরদিন ২৬ মার্চ দুপুর প্রায় ২.১০টায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের মধ্য দিয়ে এই বেতার কেন্দ্র মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে শুরু করে। ”

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সম্পর্কে এই বইয়ের বয়ান হলো: এম এ হান্নান কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠের পূর্বে ছাত্রলীগ কর্মী রাখাল চন্দ্র বণিককে অনুষ্ঠান ঘোষণার দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র।

একটি বিশেষ ঘোষণা। একটু পরেই জাতির উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক জনাব এম এ হান্নান। আপনারা যারা রেডিও খুলে বসে আছেন তারা রেডিও বন্ধ করবেন না। ’

তিনি প্রথমে ‘চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র’ বললেও পরে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ ঘোষণা করেছিলেন। এভাবে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ হিসেবেও সেসময় আত্মপ্রকাশ করে। ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ নাম দেয়া হয়  রেডিও ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহানের পরামর্শক্রমে।

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কে বইটিতে বলা হয়েছে: “২৬ মার্চ দুপুর প্রায় ২.১০ টায় এম এ হান্নান কর্তৃক কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র বা ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রচার করা হয়। এ কারণে বেতারের আঞ্চলিক প্রকৌশলী মীর্জা নাসিরউদ্দিন দেশদ্রোহিতার দায়ে অভিযুক্ত হন।

বেতারের মাধ্যমে ঘোষণাটি প্রচারিত হওয়ার পর পর তা আবারও প্রচার করার চিন্তা করেন বেতারকর্মী বেলাল মোহাম্মদ (অনিয়মিত বেতারকর্মী), সুলতান উল আলম, মাহবুব হাসান, আবুল কাসেম সন্দ্বীপ, কবি আব্দুস সালাম, হোসনে আরা, আবদুল্লাহ-আল ফারুক, ডা. আনোয়ার আলী প্রমুখ।

এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। ডা. সৈয়দ আনোয়ার আলীর কাছ থেকে পাওয়া বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার একটি হ্যান্ডবিলও, যা তার স্ত্রী ডা. মনজুলা আনোয়ার কর্তৃক বাংলায় প্রচারিত হয়।

এই দ্বিতীয় অধিবেশনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো প্রচারিত এম এ হান্নান কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্ব পায়।

‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা’ বইটিতে এই বেতার কেন্দ্রের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিস্তারিত ইতিহাস ‘কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে লেখা স্বাধীনতা ঘোষণার মূল দলিল’ প্রবন্ধদ্বয়ের মাধ্যমে পরিবেশনের চেষ্টা করা হয়েছে।

এতে সংকলিত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কিত সংবাদ’ পর্ব। পর্বটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ব্যাপক গুরুত্ব পাওয়ার বিষয়টি অনুধাবনে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।