ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ভালোবাসার ফুলে ফুলে ছেয়ে গেলো কফিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
ভালোবাসার ফুলে ফুলে ছেয়ে গেলো কফিন

ঢাকা: শৈশব থেকে শুরু। সাদা ক্যানভাসে রঙের বর্ণিল ছোঁয়ায় বিমূর্ত ছবিকে মূর্ত করে তুলতেন। হাস্যরসে মাতিয়ে রাখতেন চারপাশ। সেই কালিদাস কর্মকার যাত্রা করেছেন অসীম শূন্যতায়। বিদেয় বেলায় তার গুণগ্রাহীদের শ্রদ্ধার ফুলে ছেয়ে গিয়েছে তার কফিন।

সোমবার (২১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বজন আর অনুরাগীদের চোখের জলের বেদনা আর ফুলেল ভালেবাসাকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন কালিদাস কর্মকার। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদেও শ্রদ্ধা জানানো হয় তাকে।

শহীদ মিনার থেকে কালিদাস কর্মকারের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজধানীর সবুজবাগের বরেদশ্বরী কালি মন্দিরে। সেখানকার শ্মশানে তাকে দাহ করা হবে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ চারুশল্পী সংসদের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের এ নাগরিক শ্রদ্ধানুষ্ঠান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার দুই মেয়ে কঙ্কা কর্মকার ও কেয়া কর্মকার৷

সাংগঠনিকভাবে শ্রদ্ধা জানায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ,  সম্প্রীতি বাংলাদেশ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, গ্যালারি কসমস, ঢাকা গ্যালারি, বিসিক নকশাকেন্দ্র, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শিল্পী হামিদুজ্জামান খান, হাশেম খান, মনিরুল ইসলাম, শহীদ কাজী, রোকেয়া সুলতানা, ফরিদা জামান, নেপালি বন্ধু ডি প্লামা, ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ও উপ-উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ, নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক প্রমুখ।

কালিদাসের মেয়ে কঙ্কা কর্মকার বলেন, বাবা প্রতি মুহূর্তে দেশ ও দেশের শিল্পকর্মকে প্রচার করেছেন৷ এখন থেকে প্রতিবছর বাবার নামে প্রদর্শনী করবো। তার সৃজনশীল কাজের কারণে মানুষ তাকে মনে রাখবে। এ সময় বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য তিনি সবার সহযোগিতা চান।

এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শেষ এ শ্রদ্ধানুষ্ঠান।

এর আগে সোমবার সকাল ৯টায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের হিমঘর থেকে কালিদাস কর্মকারের মরদেহ নিয়ে আসা হয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় চারুকলা প্রাঙ্গণে। শিল্পী, চারুশিক্ষক ও চারুশিক্ষার্থীরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানান বরেণ্য এ চিত্রশিল্পীকে।

এখানে কালিদাস কর্মকারের প্রতি চারুকলা অনুষদের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। এছাড়াও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগ, ছাপচিত্র বিভাগ, ভাস্কর্য বিভাগ, কারুশিল্প বিভাগ, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ, প্রাচ্যকলা বিভাগ, মৃৎশিল্প বিভাগ এবং শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আরও শ্রদ্ধা জানায় বিটিভি, গ্যালারি কসমস, ঢাবি ভাস্কর্য বিভাগ প্রাক্তনী সংঘ, ঢাকা আর্ট সার্কেল, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।

ব্যক্তিগতভাবে কালিদাস কর্মকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, শিল্পী হাশেম খান, রফিকুন নবী, সৈয়দ আবুল বারক্ আলভী, কনকচাপা চাকমা, রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।

গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকারকে ঢাকার বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা কালিদাসকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
ডিএন/এইচএ/

** চারুকলায় কালিদাস কর্মকারের মরদেহ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।