শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উৎসবের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উৎসবের এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগের জুরি জোয়ানা কস-ক্রাউজে এবং উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল।
উদ্বোধনী বক্তব্য পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন চলচ্চিত্রের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি নিজে চলচ্চিত্র অত্যন্ত ভালোবাসি। বহিঃবিশ্বের নামকরা চলচ্চিত্রের সাথে তাল মিলিয়ে পূর্বের ন্যায় বর্তমানেও আমাদের দেশের চলচ্চিত্র ক্রমান্বয়ে উন্নতি করছে। এগুলোর মধ্যে জীবন থেকে নেওয়া, মনপুরা, শঙ্খচিল, লালসালু, অশনি সংকেত, অপুর সংসারের মতো চলচ্চিত্রগুলো আমার অত্যন্ত প্রিয়। এগুলো সামাজিক বিভিন্ন সমস্যাকে আমাদের সামনে তুলে ধরে এবং কিছু ক্ষেত্রে তা থেকে পরিত্রাণের উপায়ও বুঝিয়ে দেয়। এগুলো দেখলে আমরা বুঝতে পারি জীবন আসলে কী!
তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষেও নতুন নতুন চলচ্চিত্র তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও এ উপলক্ষে ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় বিশেষ এক চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়েছে যা আগামী ১৭ মার্চ উদ্বোধন করা হবে। এটি সমগ্র দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জীবন নিয়েও চলচ্চিত্র তৈরির আহ্বান জানান। একইসঙ্গে প্রতিটি জেলায় বর্তমানে একটি উন্নতমানের প্রেক্ষাগৃহ স্থাপন সময়ের দাবী বলে উল্লেখ করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শন করা হয় এবারের উৎসবের উদ্বোধনী চলচ্চিত্র ‘উইন্ডো টু দ্য সি’। স্পেন ও গ্রীসের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল জিমেনেজ।
এবারের উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম সেশনে বাংলাদেশসহ ৭৪টি দেশের মোট ২২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
উৎসবে প্রদর্শিত চলচ্চিত্রগুলো রাজধানীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন ও প্রধান মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, অঁলিয়াস ফ্রাঁসেজ মিলনায়তন, মধুমিতা সিনেমা হল ও স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শিত হবে।
উৎসব চলাকালে ৭৪টি দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার, সমালোচক, সাংবাদিক, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসসমূহের কর্মকর্তা, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ এবং অন্যান্য চলচ্চিত্র সংসদের সদস্যসহ দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উৎসবে অংশ নিয়ে দর্শকদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন।
উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ১২ ও ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক ‘ষষ্ঠ ঢাকা আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা ক্লাবের ২য় তলায় এই কনফারেন্সটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে।
এছাড়া উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ১৪ জানুয়ারি দিনব্যাপী আয়োজন করা হয়েছে দেশীয় চলচ্চিত্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রকারদের ভাবনার মিথস্ক্রিয়ামূলক অনুষ্ঠান ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’।
আগামী ১৯ জানুয়ারি নামবে উৎসবের পর্দা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২০
এইচএমএস/এবি