ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

প্রাণচঞ্চল উচ্ছলতায় এত্তো এত্তো বই!

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০
প্রাণচঞ্চল উচ্ছলতায় এত্তো এত্তো বই! স্টলে বই দেখছেন দর্শনার্থীরা। ছবি: ডিএইচ বাদল

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: ময়মনসিংহ থেকে প্রথমবার বইমেলা এসেছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অভীক আহমেদ। মামার হাত ধরে মেলা ঘুরে সে কিনে নিয়েছে অনেকগুলো বই। এর মধ্যে যেমন আছে ভূতের ও গল্পের রঙিন বই, তেমনি আছে শিক্ষণীয় গল্পের বইও। তবে মেলার এত্তো এত্তো বই হার মানিয়েছে তার কল্পনার বইমেলাকেও।

অভীকের কথায়, চারিদিকে কত্ত বই! এতো বই আমি কল্পনাও করিনি। আর প্রথমবার বইমেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে আমার।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বইমেলায় শুধু অভীক নয়, এসেছিলো আরও অনেকে। বিকেলে মেলার দ্বার খুলে দেওয়ার পর থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করে মেলা প্রাঙ্গণে।

এদিন ঘুরে ঘুরে বই দেখার সঙ্গে কিনেছেও অনেকে। বাড়ি ফিরেছে ব্যাগভর্তি বইয়ের সঙ্গে প্রাণচঞ্চল উচ্ছলতা নিয়ে। তাতে খুশি প্রকাশকরাও। স্টলে বই দেখছেন দর্শনার্থীরা।  ছবি: ডিএইচ বাদলএ প্রসঙ্গে ঐহিত্য প্রকাশনের ‌ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, তৃতীয় দিন হিসেবে এবার মেলায় আসছেন অনেক পাঠক। বইয়ের বিক্রিও বেশ ভালো। বিভিন্ন নতুন বই আসছে প্রতিদিনই। আশা করছি, এবার ভালো একটা মেলা হবে। আর পাঠকরা এবার অনেক সচেতন। বইয়ের সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়েই তারা প্রতিটি বই কিনছেন।

মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপ-বিভাগের তথ্যমতে, মেলার তৃতীয় দিনে নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ৮১টি। এর মধ্যে পাঞ্জেরী থেকে আলম তালুকদারের ‘রূপকথার আজবকথা’, বাংলা একাডেমি থেকে হারুন-অর-রশিদের ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব কি ও কেন’, আগামী থেকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ‘গান্ধীর দর্শন ও শেখ মুজিবের রাজনীতি, রফিকুল ইসলামের ‘মুক্তিযুদ্ধ সমগ্র’, অন্যপ্রকাশ থেকে সাদাত হোসাইনের ‘মেঘের দিন’, অনন্যা থেকে শামসুর রাহমানের ‘উপন্যাস সমগ্র’ অন্যতম।  

এদিন ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথা-শিল্পী হাবিব আনিসুর রহমান, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, লেখক অঞ্জন আচার্য এবং শিশু-সাহিত্যিক পলাশ মাহবুব। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব: কী ও কেন’ শীর্ষক আলোচনা।

এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক এম অহিদুজ্জামান এবং সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু। লেখকের বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি কামাল চৌধুরী।

আলোচনায় প্রাবন্ধিক বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ঐতিহাসিক পটভূমিতে বঙ্গবন্ধুর ‘প্রথম বিপ্লব’ অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি, ‘বাংলাদেশ বিপ্লব’ হিসেবে সর্বদাই বিবেচিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সরকার সংবিধান চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় সরকার পদ্ধতির স্থলে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং বাংলাদেশের প্রতি অনুগত, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-আদর্শ বিশ্বাসী সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় দল গঠন করেন। বঙ্গবন্ধুর এ উদ্যোগ রাজনৈতিক বিপ্লবের দ্বিতীয় ধরন। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের প্রধান লক্ষ্যই তৎকালীন বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন। ব্যাপক ও বিস্তৃত কর্মসূচির সার-সংক্ষেপের কারণে ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব: কী ও কেন’ গ্রন্থটি বিপুল প্রচার ও পাঠ কাম্য। সন্তানকে নিয়ে বইমেলায় এক দম্পতি।  ছবি: ডিএইচ বাদলসভাপতির বক্তব্যে কামাল চৌধুরী বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন তুলে ধরার যে দায়িত্ব আমাদের রয়েছে তা কেবল আবেগ দিয়েই সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন গবেষণা ও অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সামগ্রিক জীবনের পর্যালোচনা।

সন্ধ্যায় মূলমঞ্চে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি কাজী রোজী, কবি সানাউল হক খান, দিলারা হাফিজ ও কবি আসাদ মান্নান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী বেলায়েত হোসেন, গোলাম সারোয়ার এবং ঝর্ণা সরকার। সংগীত পরিবেশন করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, লিলি ইসলাম, সারোয়ার হোসেন বাবু ও জয়ন্ত আচার্য।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২০
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।