ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ব্যাগভর্তি শব্দ আর স্বপ্ন নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরা

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০
ব্যাগভর্তি শব্দ আর স্বপ্ন নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরা

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: আব্বু-আম্মুর হাত ধরে হাঁটি হাঁটি পা পা করে বইমেলায় এসেছে ছোট্ট সোনামণি আদৃত। বইয়ের প্রতি যে তার গভীর ভালোবাসা, তা বোঝা যায় হাতের মুঠোয় বই ধরার ধরনটা দেখলেই। স্টলের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত থরে থরে সাজানো বই থেকে প্রচ্ছদ দেখে নিজের পছন্দেরটা বেছে নেওয়ার চেষ্টার অন্ত নেই যেন তার। পাশাপাশি আঙুলের ইশারায় বাবাকে প্রশ্ন করা, এটা কী?

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে অমর একুশে গ্রন্থমেলার শিশুপ্রহরে আদৃত’র মতো এসেছিল অবন্তী, তিথি আর ফারদিন। এসেছিল আরও বহু শিশু।

বাবা-মায়ের হাত ধরে এসময় তারা ঘুরেছে পুরো মেলা, কিনেছে নতুন নতুন বই। আনন্দ করেছে সিসিমপুরের প্রিয় চরিত্র হালুম-ইকরি-শিকু আর টুকটুকির সঙ্গে।

বেলা গড়াতেই মেলায় আগমন ঘটে সব বয়সী মানুষের। অনেকেই ঘুরে ঘুরে নিজের পছন্দ মতো বই কিনেছেন। অনেককে আবার দেখা গেছে ক্যাটালগ সংগ্রহ করতে। মেলায় ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ নতুন বই চলে এসেছে। পাঠকরা তাই অনায়াসেই নতুন বই হাতে তুলে নিচ্ছেন। পছন্দ হলেই দ্বিধা না করে বাড়ি ফিরছেন ব্যাগ ভর্তি শব্দ নিয়ে।

এ প্রসঙ্গে যাত্রাবাড়ি থেকে আসা তানিয়া আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বই মেলার শুরুর দিকে ভিড়টা কম থাকে। পরের দিকে অনেক ভিড় হয়। তখন স্বাচ্ছন্দ্যে বই কিনতে পারি না। তাই এবার একটু আগে আগেই চলে আসলাম, বইও কিনেছি। বই পড়ার মধ্য দিয়েই তো চিন্তার জগৎ বিকশিত হয়। তাই সন্তানদের সঙ্গে আনা। বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া তাদের আনার অন্যতম আরও একটি কারণ।

সময় যতটা পেরিয়েছে মেলায় বেড়েছে বইপ্রেমীদের আনাগোনা। এরমধ্যে বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এম আবদুল আলীম রচিত ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা-আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশ নেন প্রতিভা মুৎসুদ্দি। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন এম আবদুল আলীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

এদিন কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি অঞ্জন সাহা, আতাহার খান, টোকন ঠাকুর এবং রাসেল আশেকী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ইকবাল খোরশেদ, মাসুদুজ্জামান এবং মীর মাসরুর জামান রনি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় গোলাম কুদ্দুছের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’। সংগীত পরিবেশন করেন আবুবকর সিদ্দিক, অণিমা মুক্তি গোমেজ, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস এবং মো. মুরাদ হোসেন।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শামীম রেজা, দীপু মাহমুদ, শিহাব শাহরিয়ার এবং সাদিয়া মাহজাবীন।

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপ-বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে বইমেলায় মোট বই প্রকাশ হয়েছে ২০১টি। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি এনেছে সৈয়দ শামসুল হকের লেখা ও ফকরুল আলম অনূদিত বঙ্গবন্ধুর শিশুতোষ জীবনী গ্রন্থ ‘ব্যালাড অব আওয়ার হিরো বঙ্গবন্ধু’, শোভা প্রকাশ এনেছে জুলফিকার নিউটনের প্রবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও রাজনীতি’, আগামী প্রকাশনী এনেছে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বেলাল চৌধুরীর ‘বত্রিশ নম্বর’, অনিন্দ্য থেকে এসেছে মোশতাক আহমেদের সায়েন্স ফিকশন ‘রিরি’, পুথিনিলয় এনেছে ‘বুক পকেটে রবীন্দ্রনাথ’ (২৫ খণ্ড), চন্দ্রাবতী একাডেমি এনেছে মারুফুল ইসলামের ‘মানুষ মানুষ আয়না’, বাংলা প্রকাশ এনেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘প্রকৃতি ও প্রেমের কবিতা’, শিশু গ্রন্থকুটির এনেছে জাহীদ রেজা নূরের ‘স্পেনের রূপকথা’, কথাপ্রকাশ এনেছে সুমন্ত আসলামের ‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন চা খেতে আসেন আমাদের বাসায়’, অনন্যা এনেছে শামসুর রাহমানের ‘শামসুর রাহমানের গল্প’, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী এনেছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘আমার সাইন্টিস মামা’ প্রভৃতি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২০
এইচএমএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।