ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চা-শিল্প’: চায়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যগাঁথা গ্রন্থ

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২০
‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চা-শিল্প’: চায়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যগাঁথা গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে চা শিল্প’ গ্রন্থটির প্রচ্ছদ। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বাংলাদেশের চায়ের ইতিহাস দেড়শত বছরের বেশি। এই চা-শিল্পের সঙ্গে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন শতসহস্র অধিকার বঞ্চিত মানুষ।

 নীতিমালায় সেই সব অভাগা চা-শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারের কথা সুস্পষ্টভাবে বলা থাকলেও তারা আজো জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়া অবহেলিত জনগোষ্ঠী। এসব পিছিয়ে পড়া চা-জনগোষ্ঠীর নানা অবদানের কথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সঙ্গে চমৎকারভাবে জুড়ে দিয়েছেন রাজু।  

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর চা-বাগানে জন্মগ্রহণ করেন এই চা-শ্রমিক সন্তান। চা-শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট বঞ্চনা-হতাশা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করার সুযোগ হয়েছে তার।  

সেইসব জমাটবদ্ধ কথামালাই প্রকাশ ঘটেছে রাজু দেশোয়ারার রচিত তথ্যবহুল ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চা-শিল্প’ গ্রন্থটিতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ গ্রন্থমালায় স্থান পেয়েছে এ বইটি।

চলতি মাসের প্রথমদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী রাজু দেশোয়ারা লেখা ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চা-শিল্প’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকু।  

সে সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কেএম শাখাওয়াত মুন, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার জীবন প্রমুখ। ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে চা শিল্প’ গ্রন্থগুচ্ছ।  ছবি: বাংলানিউজএই বইয়ের মাধ্যমে জাতির পিতার কর্মময় জীবনের অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে উল্লেখ করে লেখকের ভূয়সী প্রশংসা করেন উপস্থিত অতিথিরা।  

বইটির মূল প্রবন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী নীলুফার আহমেদ বলেছেন, ‘উনিশ শতকের শুরুতে বাংলাদেশে চা-শিল্পের বিকাশ ঘটে। এ শতকের শেষভাবে একক জেলা হিসেবে সিলেট সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে চা-উৎপাদনে শীর্ষ এবং বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নেয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরে চা ছিল দেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। শ্রমঘন এ শিল্পে বর্তমানে প্রায় দেশ লাখ জন শ্রমিক (চা শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্যমতে) কাজ করছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ’

‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চা শিল্প’ বইটি ১৫৯ পৃষ্ঠার। মূল্য ৪শ টাকা। এটি প্রকাশিত হয়েছে শূন্য প্রকাশনী থেকে চলতি বছরের জুলাই মাসে। ২১টি বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সাবলীলভাষায় ধাপে ধাপে যুক্ত করা হয়েছে। চায়ের বিশ্ব ইতিহাস, বাংলাদেশে সূচনা, চা-শিল্পকে সুদূরপ্রসারী করতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা, চা-শ্রমিকদের নানান সমস্যা-বঞ্চনার প্রাসঙ্গিক আলোচনা, চা-শ্রমিকদের সংস্কৃতি ও জীবনবৈচিত্র্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রাণদানকারী  চা-শ্রমিকদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা প্রভৃতি বিষয়গুলো বইকে দারুণভাবে সমৃদ্ধ করেছে।  

বইটির লেখক রাজু দেশোয়ারা বাংলানিউজকে বলেন, উপমহাদেশের চা-শিল্পের ইতিহাস, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে চা-শ্রমিকদের আত্মত্যাগের অবদান, চা-শ্রমিকদের জীবনমান আলোচনা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চা-শিল্প নিয়ে যত অবদান সবকিছুই এখানে প্রকাশের চেষ্টা করেছি। আমি বিশ্বাস করি-এই বইটি তরুণ প্রজন্মের চা-শিল্প ও তার শিল্পীদের (শ্রমিক) নিয়ে জানার আগ্রহ মেটাতে সক্ষম হবে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‌‌‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে চা শিল্প’ বইয়ের রয়্যালটি বাবদপ্রাপ্ত সমুদয় অর্থ চা-শ্রমিক সন্তানদের লেখাপড়াখাতে ব্যয় হবে বলেও জানান বইটির লেখক রাজু দেশোয়ারা।  

বইটি পেতে রকমারি.কম অথবা প্রকাশক (০১৭১-৯৮৪৩১০৬, ০১৮২৪-৬০০৫৫৯) এর সাথে যোগাযোগ করা যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২০
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।