প্রকৃতি-পুরুষ জোড়
ঊষের তপ্ত পুরুষ প্যাঁচে ধরে রাইপ্রকৃতি
দুই তীরে ষড়রিপুর আনচান
দলাদলা, নিখাদ আনন্দে মন্থন
ক্ষীণতোয়া নহর পায় ঠোঁটের লাক্ষা রস
অতঃপর, ডেউয়া ফলের মতো কুচযুগল
স্তনের মোহন চূড়ার জামফলে জীবন্তজিহ্বাটুকু শিরশির
চু
চু
অজস্র উথালে চিৎপুরুষ
বর্ণের দেহে বর্ণে যুক্তাক্ষরে ফলা
নবরূপে ফোটে ফুল
শাটার চিরে পটচিত্র উজল উজাড় ফল জ্বলজ্বল
আলোর সরু গাঙ মুখে মোহনিয়া নয়াচর চচ্চর
পা পা-হীন রাই অঙ্গে শ্যাম অঙ্গ পুরে
নাম আর ক্রিয়ার লাগালাগি
মন দেহরে দেয় দ্রুতি, কৃষিকাজে ফলন দেখাদেখি
পুরুষ-প্রকৃতি সম্পর্ক: পুরুষের পুরে প্রকৃতি বিকশিত হচ্ছে যেন অন্ধের স্কন্ধে খঞ্জ
ইভেন্ট হরাইজন
রাতে মাংস খেতে আসা কুমির যাপনের গল্প শুনে
গভীর জলে হারিয়ে যায়
যাদুর কাঠি নিয়ে গেছে রাজকুমারী
সবুজ মুছে ঘন অন্ধকার
সবই হারিয়ে যায়
কাশফুল, বেলি, শিউলি, ভাঁটফুল
যায় না জীবন
বলে হারামজাদা পৃথিবী নরকে চল
চুম্বক ভর ই-ই
অভিজ্ঞ পুরুষ হাত স্পর্শ করলে এমন বিদ্যুৎগ্রস্ত হওয়ার কথা কি? বালকের প্রথম নারী স্পর্শের মতো তোমাকে স্পর্শ করলেই এমন আভূমি ই-ই কেঁপে উঠি কেন তাই ভাবি। হয়তো সত্যিই একটি চুম্বকীয়তা আছে আমাদের ভিতর অথবা ভালোবাসার একটি বিদ্যুৎ, যা শুধুমাত্র আঙুলের সংস্পর্শে যোগাযোগ হয় কিংবা আমার আঙুল আমার আঙুল থেকে বের হয়ে যায়।
বোবায় ধরে সাঁঝবেলা
কেবল সন্ধ্যার চা-ই কেন নাকেমুখে ওঠে?
সমস্ত রা রাখো ভরে কলঙ্গায়, দেরাজ আমার ভাষা নয় বা অনুনয় আমার ঠাট। ঠোঁটে ঝুরে নক্ষত্রেরা, অংশত বিষ হয়ে ঝিকোয়। বোঝো কি গান ওঠে না যে গলায় তার নীরদে আলোলিকা বাদলের মহল, কে নামায় ষড়যন্ত্রে? সে আমার অন্তরবাসী কিংবা আমাদের যৌথদালান
‘থকে’ যাই বড়ো, চোখ ভোর না হতেই সকলের ভাষারা পথ হাঁটে, অলিগলি ভিড় করে যায়...
অনুবাদ যদি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কারখানা, আমি মরে মিছিল হয়ে থাকতাম অনুক্ষণ। একাকী বিপুল মৃত্যুবাহে একটা আঃ অবধি নেই, মুখের পেশীরা স্ফটিক-সিপাহী, বোবার অনন্ত সাম্রাজ্য আমার।
জগতের সমস্ত গ্রন্থেরা এই সান্ধ্যকালে আমায় না করে দিয়েছে।
গর্জন খাঁ, আমার আব্বা, তাঁর জন্য এলিজি
আঁধারে অন্ধ হয়ে গেছি
জানালাও খোলা নেই শ্বাস নেওয়ার
নোনা জলে ভেসে গেছে পৃথিবী
কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো আর?
আছাড় খেলে বলবে কে –
‘বাবা উঠে দাঁড়াও,
মানুষের শ্বাসের পথ মৃত্যু পর্যন্ত’
- একা এবং একাকী পার হচ্ছি পুলসেরাত
আমার যে শহর নেই কখনও, তার প্রতিমা রটাই
চিৎকার দেখলে সন্তর্পণ হবার অভ্যেস নেই
ফেননিভ সমস্ত সুখানুপুঙ্খে গেঁথে আসে বর্ষা
আক্রান্ত গরাদ, শিমুল, তুলসী।
কাকে শোনাবে প্রমাদ
এসব আকন্দের মুহুর্মুহু
দ্রুমের আয়নায় কে ছড়ায় রাতশূন্যতায় আলো?
কে আর প্রার্থনায় জায়নামাজে চাঁদ নীল হাড়ে?
কে দেয় গুঁজে বলয় উপরে আদিত্যরঙ?
আঁধারের পিঠে পাথর ছিল প্রশ্নহীন
তুমি-আমি ঘ্যানঘ্যানে চৌচির
আলী আফজাল খান
জন্ম: ৩০ জুলাই, ১৯৭৮, হাজারীবাগ, ঢাকা। পৈতৃক নিবাস: সিংগাইর, মানিকগঞ্জ।
সম্পাদিত পত্রিকা:
ভিন্নচোখ- একটি সৃজনশীল লিটলম্যাগ
পোস্টমর্টেম- একটি বইয়ের পত্রিকা
প্রকাশিত কবিতার বই:
১. রাধা আমার দ্রৌপদী আমার (নন্দিতা প্রকাশ, ২০১৩)
২. এন্টিম্যাটার (ভিন্নচোখ, ২০১৫)
৩. তরজা: পালা কবিতা (ভিন্নচোখ, ২০১৭)
৪. অণু ভবের জার্নাল (ভিন্নচোখ, ২০১৯)
প্রকাশিত গদ্যের বই:
ভাষার হাঁড়ি (ভিন্নচোখ, ২০১৬)
সম্পাদিত গ্রন্থ:
১. ভাস্কর চৌধুরীর প্রিয় কবিতা (ভিন্নচোখ, ২০১৮)
২. ব্রাত্য রাইসুর সাক্ষাৎকার (বহিঃপ্রকাশ, প্রকাশিতব্য)
প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক: ভিন্নচোখ সিনে সার্কেল সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক: বাংলাদেশে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ
সংযোগ:
www.facebook.com/vinnochock
[email protected]
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২০