ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

দ্বিভাষিক সাহিত্যপত্রিকা ‘ঢাকা লিটারেচার’র আত্মপ্রকাশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
দ্বিভাষিক সাহিত্যপত্রিকা ‘ঢাকা লিটারেচার’র আত্মপ্রকাশ দ্বিভাষিক সাহিত্যপত্রিকা ‘ঢাকা লিটারেচার’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান | ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: যাত্রা শুরু করলো ঢাকা থেকে প্রকাশিত দ্বিভাষিক সাহিত্যপত্রিকা ‘দ্য ঢাকা লিটারেচার’। এক মলাটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাহিত্যিকদের লেখা নিয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হবে ত্রৈমাসিক পত্রিকাটি।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে লা ভিঞ্চি হোটেলে সাহিত্যপত্রিকাটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

‘দ্য ঢাকা লিটারেচার’ যৌথভাবে সম্পাদনা করছেন—রেজাউদ্দিন স্টালিন, আবদুর রব ও কবীর হোসেন তাপস। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের শুরুতেই পত্রিকাটি নিয়ে কথা বলেন কবীর হোসেন তাপস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে কবিতা হচ্ছে, উপন্যাস হচ্ছে, গল্প হচ্ছে—আমরা তার একটি মানসম্মত অনুবাদ করে প্রকাশ করতে চাই। একইসঙ্গে কাগজের পত্রিকার পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে সারাবিশ্বে এটি আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই। যেন সবাই বুঝতে পারে বাংলাদেশের সাহিত্য কত সমৃদ্ধ।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক ও কবি জুয়েল মাজহার বলেন, আমাদের সৃষ্টি আছে। তবে অন্যের কাছে পৌঁছানোর যে মাধ্যম, সেটি আমরা করতে পারছি না। আর এটা না হলে আমাদের মণি-মাণিক্য থাকলেও বড় হওয়া সম্ভব নয়। তাই বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার সঙ্গে যোগাযোগ ঘটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের এই বিষয়ে আরও উদ্যমী হতে হবে।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মুন্নী সাহা বলেন, আমরা অনেক কিছুই ভালো করি, কিন্তু যখন আমরা কলকাতা বা দিল্লিতে যাই, তারা এমন ধরনের দাদাগিরি করে, যেন মনে হয় আমাদের যে উপাদান আছে, তা নিয়ে আমরা ভালো করে ইংরেজি বলতে পারি না, ভালো করে বোঝাতে পারি না; এ কারণেই ওরা অনেক এগিয়ে, আমরা অনেক পিছিয়ে। সেই জায়গায় আমার মনে হয় এটা একটা জবাব হলো।

সাংবাদিক জ ই মামুন বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে আরও আগেই কাজ করা যেত। তবে এখনো খারাপ নয়। এই কাজের মধ্যেও আশা আছে, ভালোবাসা আছে, যত্ন আছে। আশা করি এর পথচলা আরও ভালো হবে।

আয়োজনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, এই কাজের মধ্য দিয়ে একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো। আশা করি, এই চলার পথ আরও দীর্ঘ হবে, সামনে এগিয়ে যাবে।

বিশিষ্ট লেখক কামরুল হাসান বলেন, ভালো অনুবাদের কারণেই বাংলাসাহিত্য বিশ্ব দরবারে দাঁড়াতে পারেনি। আমাদের সাহিত্যের অনুবাদ সেভাবে হয়নি। যা হয়েছে, তার অনেকগুলোই সুখপাঠ্য নয়। অথচ বিশ্বমানের লেখা হয় বাংলাসাহিত্যে, কিন্তু বিশ্বমানে তা দাঁড়াতে পারে না। অনুবাদের কারণেই বাংলাসাহিত্য বিশ্ব দরবারে পেছনে। সেই জায়গাটি থেকে এই ম্যাগাজিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই আশা করি।

লেখক জুলহাস নূর বলেন, এখন আমাদের দেশ, আমরা বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সাংস্কৃতিক সূচকে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে। সরকারের উচিত কালচারাল জিডিপিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়া। এজন্য অনুবাদে গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক।

আয়োজনের শেষে ‘দ্য ঢাকা লিটারেচার’ এর সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং আবদুর রব বলেন, আমরা যখন বিশ্বসাহিত্য পাঠ করি, তখন বুঝি বাংলাসাহিত্য কতটা সমৃদ্ধ। তবে বাংলাসাহিত্য অনুবাদের অভাবে বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছায় না। বিশ্ব বাংলাসাহিত্য সম্পর্কে জানতে পারে না। অথচ আমাদের কত না রত্ন আছে এই ক্ষেত্রে। সেই জায়গাটি থেকেই বাংলাসাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার সামান্য প্রয়াস এই ম্যাগাজিনটি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রভাষ আমিন, লেখক কাজী তাপস, কবি মাশরুরা লাকী, কাকলী আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন লেখক লায়লা আফরোজ এবং লুলুয়া ইসহাক মুন্নী। সঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী প্রিয়াঙ্কা গোপ। অনুষ্ঠানে সবার ভালোবাসা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে সিক্ত হয় ‘দ্য ঢাকা লিটারেচার’।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।