ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হতে আর কত বাকি?

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৩
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হতে আর কত বাকি?

নীলফামারী: সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার কাজ চলছে।  আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ঘোষণার পর টুকটাক কাজ শুরু হলেও মূলত বিমানবন্দরের কাজ শুরু হয়েছে বছর তিনেক আগে।

উত্তরের সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি আদৌ কি আন্তর্জাতিক হবে, নাকি আঞ্চলিক হাব হিসেবে গড়ে উঠছে- এমন প্রশ্ন স্থানীয়দের মনে।

গত ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক করা হবে। সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে বলে জানায় সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করে এটির নাম প্রধানমন্ত্রীর স্বামী প্রয়াত ড. ওয়াজেদ মিয়া অথবা প্রধানমন্ত্রীর ছোট ভাই শেখ রাসেলের নামে করার দাবি জোরালো হচ্ছে।  

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাঙালির রক্ত ঘামে এ বিমানবন্দরটি তৈরি করিয়ে নেয় পাকিস্তানি সেনারা। সে সময় বাঙালিদের আটকে রেখে ও নির্যাতন চালিয়ে বিমানবন্দরটি তৈরি করিয়ে নেওয়া হয়। পাকিস্তানি সেনারা মূলত রসদ ও গোলাবারুদ পরিবহনের জন্য বিমানবন্দরটি নির্মাণ করে। পরে ১৯৭৭ সালের জুলাই মাসে বিমানবন্দরটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এ বিমানবন্দরে প্রতিদিন ১৫টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে। এছাড়া ঈদ ও অন্যান্য সময় ২০/২২টি ফ্লাইট নিয়মিত চলাচল করতে দেখা গেছে।  

সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। করোনার অতিমারির সময় কাজ কিছুটা শিথিল হয়ে পড়ে।  

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োসিন হিরিন নামে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে মাস্টারপ্লান করেছে। সে অনুযায়ী ৯১২ দশমিক ৯৪ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। ভারতীয় ঋণ (তৃতীয় পর্যায়) এনওসির আওতায় সৈয়দপুর বিমানবন্দর আপগ্রেডেশন প্রকল্পটি চলছে। বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণের খবরে জমি অধিগ্রহণকৃত এলাকায় রাতারাতি বাড়িঘর তৈরি করা হয়েছে।  

বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা ফজলুর রহমান চৌধুরী জানান, আমরা চিন্তায় আছি। আমাদের বাড়িঘর থাকবে কি না। কারণ দীর্ঘদিনেও আমাদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। জমি অধিগ্রহণ করা হবে কি না, তাও বলতে পারছি না। অধিগ্রহণ না হলে অন্য জায়গায় আবাসও গড়ে তুলতে পারছি না। অত্যন্ত ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে বিমানবন্দরের।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সুপলব কুমার ঘোষ জানান, অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে সৈয়দপুর হচ্ছে ব্যস্ততম বিমানবন্দর। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) বার্ষিক মূল্যায়নে সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি সেরা হিসেবে স্বীকৃত। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এর ৭০ ভাগ কাজ এগিয়েছে।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ে দেশের সব বিমানবন্দরের চেয়ে বড় হবে। ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। যার ফিল্ড বুক তৈরি হয়েছে। এসব জমির মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নে পড়েছে ৫৩৫ একর ব্যক্তি মালিকাধীন জমি, সরকারি জমি ৬০ একর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৯ একর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৬ একর, সৈয়দপুর সেনানিবাসের ১৪ একর ও খাস জমি ১৩ একর। অপরদিকে এর মধ্যে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের ৩১৭ একর ব্যক্তি মালিকাধীন জমি রয়েছে। অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে অধিগ্রহণ শুরু করা হবে। তবে যারা রাতারাতি ঘর তুলেছেন, তাদের ফিল্ড বুকের ভিডিও ফুটেজ দেখে অর্থ ছাড় করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।