ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

নেভার এগেইন 'এয়ার লেইট এশিয়া'য়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
নেভার এগেইন 'এয়ার লেইট এশিয়া'য়

ঢাকা: জার্মানির যাত্রী রাজনার, এয়ার এশিয়া ভ্রমণে তার রয়েছে বিষাদময় অভিজ্ঞতা। আর কখনো এই এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

অন্যদেরও পরামর্শ দিয়েছেন এয়ার এশিয়ার প্লেনে না চড়তে।

এয়ারলাইন্সরেটিং.কম এ 'আর কখনোই নয়' শিরোনামে এয়ার এশিয়ায় ভ্রমণে নিজের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি।

রাজনার বলেন, ‘আমি সাধারণত কোথাও রিভিউ দেই না। কিন্তু এইবার মনে হয়েছে অন্তত অন্যান্য যাত্রীদের বিষয়টি অবহিত করাটা আমার কর্তব্য। এই ফালতু এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ না করতে তাদের অনুরোধ করবো।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি সিঙ্গাপুর থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার জন্যে এয়ার এশিয়ার টিকেট কিনি। ফ্লাইটে পুরো ২ ঘণ্টা দেরি হয়। ভাবলাম যা হয়েছে, এটা আমার দুর্ভাগ্য। কিন্তু তাদের প্লেনে যখন আবার সিঙ্গাপুরে ফিরলাম, তখনও এক ঘণ্টা দেরি!

এরপর একবার ম্যানিলা যাওয়ার সময় ফ্লাইট বাতিল করা হলো। জাকার্তা থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার সময় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা করে দেরি!

এয়ার এশিয়ার স্টাফদের বিষয়টি জানানো হলেও তাদের মধ্যে কোন দুঃখবোধ দেখতে পাওয়া যায় না। বরং উল্টো তাদের আচরণ ঔদ্ধত্বপূর্ণ। কাউন্টারের সুন্দরী নারী আমাকে অতিরিক্ত চার্জ দিয়ে তাদের লাউঞ্জে অপেক্ষা করার জন্য পরামর্শ দেয়!

রাজনার বলেন, ‘অাপনি যদি এই এয়ারলাইন্সের টিকেট কাটেন এবং তাদের ফ্লাইট দেরি হয় বা বাতিল হয় আপনাকে তারা কোন ক্ষতিপূরণ দেবেই না এমনকি দুঃখও প্রকাশ করবে না।  

এয়ার এশিয়ার কাস্টমার সার্ভিসের পুরোটাই একটা প্রহসন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইকোনমি ক্লাসে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, তাদের বিমানগুলো বেশ পুরনো এবং রক্ষণাবেক্ষণও খুব দুর্বল। তাদের সবসময়ই যান্ত্রিক ত্রুটি লেগেই থাকে। এখন বাকিটা আপনাদের হাতে।

অন্য যাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি যদি নিশ্চিন্তে এবং সময়মতো আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে চান তাহলে অন্য কোন এয়ারলাইন্সে যান এমনকি প্রয়োজনে বাসে অথবা হেঁটে যান, এ সব কিছুই অন্তত 'এয়ার লেইট এশিয়া'র চেয়ে ভাল।

এয়ার এশিয়ায় ভ্রমণে নিজের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক জেসনও। জেসন তার সঙ্গীদের নিয়ে ভ্রমণ করেছিলেন এয়ার এশিয়ায়। গত ৮ অক্টোবর এয়ার এশিয়ায় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা বর্ণনায় তিনি বলেন, আমরা সিডনি থেকে কুয়ালালামপুর এবং সেখান থেকে কম্বোডিয়ার ফ্লাইট বুকিং দিয়েছিলাম। ভ্রমণের প্রথম থেকেই বাজে নাটক শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রথম যে বাজে কাজটি তারা করেন, তা হলো বিনা নোটিশে সিডনি থেকে কুয়ালালামপুরের ফ্লাইট পরিবর্তন করে দেয়া। সেই যাত্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়। আমরা দুই ঘণ্টা ধরে তাদের ফোনে চেষ্টা করি কিন্তু তাদের কেউ ফোন রিসিভ করেনি।

অন্যান্য যাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লক্ষ্য করে দেখুন এয়ার এশিয়ার ভাড়া বাড়ছে কিন্তু সেবার মান কমছে।

অস্ট্রেলিয়ার আরেকজন নাগরিক এয়ার এশিয়ায় তার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, ভীতিকর বাজে সেবা, কোন খাবার নেই, সিনেমা নেই, ব্যাগ হারালে তা ফিরে পেলেও ফোন দেয়া হয় না। আমার সবচেয়ে বাজে বিমান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা এয়ার এশিয়ায়।

‌বাংলাদেশেও বর্তমানে ফ্লাইট পরিচালনা করছে এয়ারলাইন্সটি। এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মত বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রম শুরু করে এয়ার এশিয়া। প্রথম দফায় নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে যাত্রী হারিয়ে অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিলো এয়ারলাইন্সটি।

প্রথম দফায় ২০০৯ সালের মার্চে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে এয়ার এশিয়া। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ভ্রমণের কয়েক মাস আগেই তাদের টিকেট কিনতে হতো। কিন্তু এর দুই বছর পরই ২০১১ সালের ১ জুলাই হঠাৎই এয়ার এশিয়া নিজেদের সব ফ্লাইট ‘স্থগিত’ করে। যারা অগ্রিম টিকেট করেছিলেন, তাদের টাকাও আত্মসাৎ করে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন আদালতে মামলাও চলে।

এরপর আবারো টোটাল এয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপনায় ২০১৫ সালের ১০ জুলাই থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে এয়ার এশিয়া। অন্যান্য রুটের মতই এ রুটেও অবশ্য পুরনো বদনামকে সঙ্গী করে যাত্রীদের কাছে বাজে কাস্টমার কেয়ারের পরিচিতি অর্জন করেছে এয়ার এশিয়া।

**যাত্রীদের পানিও দেয় না এয়ার এশিয়া!

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।