ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

উড়ন্ত রিজেন্টে দুরন্ত শিশু!

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
উড়ন্ত রিজেন্টে দুরন্ত শিশু! উড়ন্ত রিজেন্টে দুরন্ত শিশু!-ছবি: বাংলানিউজ

জুলাইয়ের তেরো আমার ফেরার পালা। পাশের আসনে সহযাত্রী পনেরো মাসের শিশু। তার বাবার কথায় সে নাকি এখনই বুঝতে শিখে গেছে ভ্রমণের আনন্দ। অফিসের ব্যস্ততায় সবে পাওয়া ঈদের ছুটি। কোনো মতেই নষ্ট করতে চান না তারা। বাবার ছুটিতো তারও ছুটি। ভ্রমণপথ কলকাতা। কোনো মতেই সিট বেল্ট বাঁধবে না সে। বুলি ফোটেনি ‍শিশুটির। মনে মনে যেনো বলছিল: ‘থাকবো না আর বদ্ধ ঘরে/ দেখবো এবার জগতটাকে...’

বিমান তখন প্রায় ১৭ হাজার ফিট উচ্চতায়।   ধৈর্য় আর নেই শিশুটির।

অস্থির পানি দুচোখ ভরে। ছুটে এলেন কেবিন ক্রুরা। তাদের জৌলুসপূর্ণ মিষ্টি হাসিও থামাতে পারলো না তাকে। অবশেষে উড়ন্ত বিমানে মায়ের উন্মুক্ত হাত ওপরে তুলে বোঝানোর চেষ্টা এই তো বাবা এসে গেছি! আর কিছুক্ষণ।

মায়ের কথা সবার আগে বুঝতে পারে শিশুরা। হলোও তাই। থামলো কান্না। এক গাল মনভোলানো হাসি। আপন মনে মায়ের সাথে খেলে চললো শিশুটি। ছুটে আসেন ক্রুরা। আবার বাঁধন পড়লো শিশুটির কোমরে। মনে হচ্ছিল একরাশ কান্নার মধ্যে দিয়ে, ক্রুটির দিকে বিরক্তি ছুড়ে দিচ্ছিল সে। উড়ন্ত রিজেন্টে দুরন্ত শিশু!-ছবি: বাংলানিউজ
অবশেষে মায়ের আবদারে মুক্তি। খোলা হলো বাঁধন। মায়ের উন্মুক্ত হাত বসলো সিটের ওপরে। এবার যে কাজটি করলো শিশুটি, আমার মত অন্যান্য আরোহীরা না হেসে থাকতে পারলো না।   সরাসরি ক্রুটির দিকে হাত দেখিয়ে- টাটা। বুলিহীন শিশুটি তাদের জানান দিলো তোমরা যেতে পারো; আমি মায়ের কাছে নির্ভয়ে আছি। হাসিমুখে ক্রুর চলে যাওয়া ছাড়া উপায় কি! শুধু বলে গেল, নাস্তা আসছে দয়া করে ওকে আসনে বসান।

১৫ মিনিটি বাদে এলো নাস্তা। ভালো লাগলো না আমার মতোই তারও। বাঙলার বিমান, বাঙলার আকাশে, যাত্রীও সব বাঙালি। তাহলে পশ্চিমি আদলে খাবার কেন?  স্বল্প পথের জার্নি, তাতে কি? সকালের নাস্তাটায় একটু বাঙালিয়ানা থাকলে ক্ষতি কিসের?   আমরা  তো আর পশ্চিমি কেতার বাঙালি নই!

ককপিঠ থেকে ক্যাপ্টেন আকবরের কন্ঠ ভেসে এলো। আকাশে আরও ষোলোটি বিমান আছে। আমাদের বিমান সতেরো নম্বরে। তাই আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে নেতাজী সুভাষচন্দ্র আন্তজার্তিক বিমানবন্দর, মানে কলকাতায় অবতরণ করতে।  

হোক না দেরি তাতে কি, আমি তো খেলছি মায়ের সাথে। স্বাচ্ছন্দ্যেই আছি রিজেন্ট এয়ারওয়েজের মধ্যে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।