রাজশাহী: যতোই দিন যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনের দিন ততোই ঘনিয়ে আসছে। আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন উপলক্ষে এরই মধ্যে সাজতে শুরু করেছে রাজশাহী মহানগর। ইতোমধ্যেই দলীয় কার্যালয়গুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। মহানগরের মোড়ে মোড়ে বড় বড় ব্যানারে শোভা পাচ্ছে সম্মেলনের তারিখ। তৈরি হচ্ছে তোরণ, রাস্তাগুলো সেজেছে বর্ণিল সাজে।
রাজনৈতিক মহলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। মূখ্য বিষয়, ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে নতুন-পুরনোর সংমিশ্রণে কারা যাচ্ছেন নেতৃত্বে। কে কী পদ পাচ্ছেন, কে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদ হারাচ্ছেন, কেন্দ্রে রাজশাহীর কে কে স্থান পাচ্ছেন ইত্যাদি।
রাজনৈতিক পাড়ায় চাউর হয়েছে জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসছেন। এমন খবরে নগরজুড়ে বর্ণিল সাজ-সজ্জায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। চারিদিকে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে।
তবে দলীয় কিছু নির্দেশনার কারণে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পদ-পদবির ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের নেতারা কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি। কিন্তু কথা বলার সময় নগর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, রাজশাহী অঞ্চলের রাজনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে এই অঞ্চল থেকে সৎ, যোগ্য ও পরিশ্রমী নেতা দেখতে চান তারা। যিনি রাজশাহীর অধিকারের কথা বলবেন।
মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান বলেন, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর থেকে আমরা রাজশাহীতে রাজনৈতিক শূন্যতা অনুভব করছি। এবারের সম্মেলনে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যদি সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে দেখা যায় তবে সেই শূন্যতা অনেকটায় দূর হবে বলে মনে করি। কারণ, সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের পরও স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে মাঠ পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করতে লিটন কাজ করে যাচ্ছেন। রাজশাহীর রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনিই তার বিকল্প।
এজন্য গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য বলে দাবি করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
এদিকে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল খালেক বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান ও আব্দুল জলিল মারা যাওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা আজও পূরণ হয়নি।
তিনি বলেন, আসন্ন সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাজশাহী থেকে নেতা নির্বাচন করার মাধ্যমে সেই শূন্যতা দূর হবে বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের ছেলে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা রাখে। রাজশাহী সিটির মেয়র থাকাকালে পাঁচ বছরে তিনি রাজশাহীর প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। একজন সফল মেয়র হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত।
ফলে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব নেওয়ার সক্ষমতা লিটনের রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, এরই মধ্যে নগর কার্যালয়সহ আশপাশের সড়ক ও শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, দ্বীপসমূহে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সাজ-সজ্জা নিয়ে নেতা-কর্মীরা অনেকটাই উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
এসএস/এসএনএস