সম্মেলনস্থল থেকে: ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে ইতিহাস মানছেন আওয়ামী লীগের গ্রাম পর্যায় থেকে আসা নেতাকর্মীরা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দলের নতুন কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সোহেল তাজসহ তরুণদের নেতৃত্বে আনার দাবি জানাচ্ছেন তৃণমূলের এসব নেতাকর্মীরা।
তারা বলছেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ করে আসা, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন- এমন তরুণ নেতাদের নতুন কমিটিতে আনলে দলের ভিশনের দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাত আরো বেশি শক্তিশালী হবে।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক-এমন অনেক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাদের দেখা গেছে, যারা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসেছেন। আবার তৃণমূলের অনেক তরুণও এসেছেন ইতিহাসের সাক্ষী হতে।
সুনামগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা নিজামুল হক কিরণ সম্মেলনে যোগ দিতে কয়েকদিন আগেই ঢাকায় এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘এ সম্মেলন হবে ইতিহাস। এটা মিস্ করা যায় না। এ কারণেই আগে-ভাগেই এসেছি’।
কিরণ আরও বলেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের কাছ থেকে দেখার এমন সুযোগ আর দ্বিতীয়টি নেই।
দলে যারা আগামীদিনে নেতৃত্ব দিতে চান তাদের জন্যও এ সম্মেলন পাথেয় বলে মনে করেন দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই ছাত্রলীগ নেতা।
শনিবার (২২ অক্টোবর) সম্মেলনস্থল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশেপাশে ঘুরে দেখা গেছে, শুধু সম্মেলনে এসেছেন, এমন স্মৃতি ধরে রাখতে ভেতরে যেতে না পারলেও বাইরের রাস্তায় মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে মনযোগ দিয়ে নেত্রীর বক্তব্য শুনছেন অনেকে।
আওয়ামী লীগের গ্রাম পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ধারণা, এবারের সম্মেলনে নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।
এমন আভাস দলের শীর্ষনেতাদের কাছ থেকে পেয়েছেন বলেও দাবি করেন তারা।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগে কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক- এমন আলোচনা তুঙ্গে। রোববার (২৩ অক্টোবর) কাউন্সিল অধিবেশন শেষে নতুন কমিটি ঘোষণার ক্ষণ পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হবে।
তবে দলটির তৃণমূল পর্যায় থেকে আসা নেতাকর্মীরা নিশ্চিত ধারণা করছেন যে, দলের ওপরের দিকের কোনো কোনো পদে তরুণরা নেতৃত্বে আসছেন। তিনি হতে পারেন সোহেল তাজ অথবা অন্য কেউ। সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে দেখতে চাইছেন বেশিরভাগ নেতাকর্মীই।
চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা একরাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়, সোহেল তাজসহ তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে নতুন কমিটি চাই। দেশের উন্নয়নে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে নতুন নেতৃত্বের বিকল্প নেই। পুরনোদের চেয়ে নতুন নেতৃত্বের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে কমিটি গঠন প্রয়োজন’।
সিলেটের কোতোয়ালি থানা থেকে আসা মো. আল আজীম বলেন, ‘সম্মেলন এসে অনেক ভালো লাগছে। সুন্দর পরিবেশে সম্মেলন হচ্ছে’।
সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা আফজাল হোসেন তুহিন বলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে ভালো ও উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের সম্মেলন হচ্ছে। এর আগে এ রকম সম্মেলন হয়েছে বলে আমার জানা নেই’।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর হাত তথা দলকে আরো বেশি শক্তিশালী করতে কমিটিতে তরুণদের প্রাধান্য চাই। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যাদের যোগাযেগ রয়েছে, তাদেরকে রাখা হোক’।
আবুল হাসান তুষার বলেন, ‘নতুন নেতৃত্ব আসুক, দেশ সুন্দরভাবে চলুক। একই কথা বলেন তার সঙ্গে আসা আরেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়, সোহেল তাজসহ তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব চাই’।
লালবাগ থানার ডেলিগেট মাহমুদ হাসান মুরাদ বাংলানিউজকে বলেন, নবীণ-প্রবীণে সমন্বয়ে, তবে নতুনদের প্রধান্য দিয়ে একটি যোগ্য কমিটি চাচ্ছি। যে কমিটির নেতারা হবেন কর্মীবান্ধব। ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি ও দলীয় সমর্থকদের গুরুত্ব দেবেন’।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের ডেলিগেট আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া ও আবু রায়হান বলেন, ‘এ সম্মেলন ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ও সুন্দর সম্মেলন। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মতোই জেলা ও উপজেলায় এ রকম সম্মেলন চাই। মাঠ পর্যায়ে কাজ করে আসা এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন, এমন নতুন নেতৃত্ব চাই’।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের নয়াহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুর সাত্তার মিয়া বলেন, ‘এবারের সম্মেলন জাকজমকপূর্ণ হচ্ছে। যোগ্য নেতৃত্বকে প্রাধান্য দিয়ে তরুণদের কমিটিতে রাখার পক্ষে আমি। যাতে তারা নেত্রীর কথা ও আদেশে সঠিকভাবে কাজ করেন’।
**জমি বিক্রির নৌকা নিয়ে সম্মেলনে একাত্তরের নুরু মিয়া
**আ’লীগের সম্মেলনে উৎসবমুখর ঢাবি ক্যাম্পাস
**‘আ.লীগ ও সিপিসি বৈষম্য দূর করার নীতিতে কাজ করছে’
**‘আ.লীগ ও সিপিসি বৈষম্য দূর করার নীতিতে কাজ করছে’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৬
এমএফআই/এসএ/এএসআর