ঢাকা: ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে ভিশন’২০২১ বাস্তবায়ন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করা ও আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হওয়াই হবে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির মূল কাজ।
এ লক্ষ্যে শেখ হাসিনার ডায়নামিক লিডারশিপে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গণসংযোগ করে আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম অনুভূতি জানাতে গিয়ে সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে এসব কথা বলেন তিনি। ধানমণ্ডিতে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় সংলগ্ন প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ওবায়দুল কাদের।
নিজেকে মন্ত্রী নয়, কর্মী উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘আগে আমি যখন রাস্তায় যেতাম, তখন দলের নেতাকর্মীরা আমাকে পেয়ে কোনো অভিযোগ করলে আমি কোনো সমাধান দিতে পারতাম না। এখন সুবিধা হবে, রাস্তায় যাবো, তৃণমূলেও যাবো। আমি অভিযোগের সমাধান ও সিদ্ধান্ত স্পটে দিতে পারবো। প্রয়োজনে স্পট থেকে মোবাইল ফোনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সমাধান করবো’।
নিজের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার অনুভূতিতে তিনি বলেন, ‘আমি আমার পরিশ্রমের পুরস্কার পেয়েছি। রাজনৈতিক জীবনের সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছি। নেত্রী আমাকে সর্বোচচ স্বীকৃতি দিয়েছেন’।
আঞ্চলিকতার প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী আমাকে গোটা বাংলাদেশের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ এক সুবিশাল দায়িত্ব। আমার বাড়ি একটি অঞ্চলে, কিন্তু আমার দল সবকিছুর ঊর্ধে। তার ওপরে দেশ। তাই এখানে কোনো আঞ্চলিকতা নেই। আমি যদি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন না করি, তাহলে নেত্রীর আস্থার অমর্যাদা হবে’।
বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও নতুন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার সাত বছরের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ আমার দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করবে’।
‘আজকেও কেবিনেটে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তার মুখাবয়বে কোনো বিচলিত হওয়া বা হতাশার ছায়া দেখিনি। গত কয়েকটি কেবিনেটের চেয়েও তাকে আজ বেশি প্রাণবন্ত মনে হয়েছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিউটি’।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেখানে আছেন সেখানে অনৈক্য-বিভেদ প্রশ্রয় পাবে না’।
‘এই যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আমার নাম প্রস্তাব করলেন, এটাই এবারের সম্মেলনের চমক এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ম্যাজিক পাওয়ার’।
প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে ধানমণ্ডি কার্যালয়ের সামনে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন ওবায়দুল কাদের। তিনি সারাদেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রেস ব্রিফিং শেষে কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলায় ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নতুন এই সাধারণ সম্পাদক।
তাদের নিয়ে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ শেষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। বিকেল ৫টায় তাদের মধ্যে বৈঠক হবে।
ওবায়দুল কাদের জানান, সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম ঘোষণা হবে। আজ-কালের মধ্যে সম্পাদকমণ্ডলীর নেতাদের নাম, দু’একদিনের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের নাম এবং তিন থেকে চারদিনের মধ্যে কার্যনির্বাহী সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের জন্য তার দরজা সব সময় খোলা থাকবে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
** ‘নিজেকে মন্ত্রী নয়, কর্মী মনে করি’
** ‘সরকারি কর্মসূচি আগের মতোই থাকবে’
** ওবায়দুল কাদেরের প্রথম বৈঠক জেলা সভাপতি-সম্পাদকদের সঙ্গে
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
এসএ/এএসআর