ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিদায়ী কার্যনির্বাহী সংসদের সম্পাদকমণ্ডলীর ৬ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা থেকে নতুন কমিটিতে বাদ পড়েছেন।
তাদের মধ্যে দু’জন আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সম্পাদকমণ্ডলীর আরও ২২ সদস্যের নাম ঘোষণা করেছেন দলটির নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ নিয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর ২৩ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হলো। আওয়ামী লীগের সদ্য সমাপ্ত সম্মেলনে পাস হওয়া গঠনতন্ত্র অনুসারে বর্তমান সম্পাদকমণ্ডলীর পদ ৩০টি। আরও ৭টি পদ ফাঁকা রয়েছে।
বিদায়ী কমিটিতে অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ছিলেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। নতুন কমিটিতে এ পদে এসেছেন টিপু মুন্সী এমপি। মোস্তফা কামাল গত তিন কমিটিতে এ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি বর্তমান সরকারের পকিল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে আসাদুজ্জামান নূরকে। এ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলনের পুরোধা সংগঠক মাঠ কাঁপানো সাবেক ছাত্রনেতা অসীম কুমার উকিল। তিনি গত তিন কমিটিতে উপ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নতুন কমিটিতে অসীম কুমার উকিলের পদোন্নতি হয়েছে।
আসাদুজ্জামান নূর গত তিন কমিটিতে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীতে ছিলেন। এর আগে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস। এ পদে গত তিন কমিটিতে ছিলেন ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের গত সরকারে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মৃণাল কান্তি দাস গত দুই কমিটিতে উপ-দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কমিটিতে তার পদোন্নতি হয়েছে।
সদ্য বিদায়ী কমিটিতে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের পদে ছিলেন ফরিদুন্নাহার লাইলি। তিনি গত দু’বারের কমিটিতে এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এবারের কমিটিতে এ পদে আনা হয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুজিত রায় নন্দীকে। তিনি গত দুই কমিটিতে কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। এবার তার পদোন্নতি হয়েছে।
বিদায়ী কমিটিতে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু। এ পদে নতুন কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডা. রোকেয়া সুলতানাকে।
এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েছেন বীর বাহাদুর। তিনি আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যে কমিটি ছিলো, সে কমিটিতেও তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নতুন এসেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। যদিও সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে এখনও বিভাগীয় দায়িত্ব বন্টন করা হয়নি।
গত রোববার (২৩ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিলে দলের সভাপতিমণ্ডলী থেকে বাদ পড়েছেন নূহ উল আলম লেনিন ও সতীশ চন্দ্র রায়। তারা দু’জনই বিদায়ী কমিটিতে প্রথমবারের মতো সভাপতিমণ্ডলীতে এসেছিলেন।
সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আর সভাপতি শেখ হাসিনা ১৪ জন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, কোষাধ্যক্ষ ও চারজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ আরও ১৯ জনকে নির্বাচিত করেন। দু’দিন মিলিয়ে ৮১ সদস্যের কার্যনির্বাহী সংসদের মধ্যে ৪৩ পদে নেতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ।
এখনও ফাঁকা থাকা ৩৮টি পদের মধ্যে রয়েছে ৩টি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, ৫টি সম্পাদক, ২টি উপ-সম্পাদক এবং ২৮টি কার্যনির্বাহী সদস্যের সবগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
এসকে/এএসআর