ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কূটনীতিকদের যে কোনো তৎপরতা থেকে দূরে রাখতে চায় সরকার। নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা ও মতামত অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত। তারা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে কথা বলতে চান। প্রায় এক মাস আগে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুমতির জন্য জানিয়েছে। কিন্তু সরকার এখনও এ ব্যাপারে কোনো সাড়া দেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন এটা তাদের বিষয় না। এটা নিয়ে তাদের কথা বলা অনধিকার চর্চা। আমরা তো কোনো দেশের নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলতে যাই না। আমাদের বিষয় নিয়ে কথা বলা তাদের একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যাদের পায়ের নিচে মাটি নেই তাদের নিয়ে এ ধরনের খেলাধুলা হয়। আওয়ামী লীগ পায়ের নিচে মাটি নিয়েই দাঁড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের ওই সূত্রগুলো জানায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিদেশি তৎপরতাকে ভালোভাবে নেয়নি আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক চাপের মুখোমুখি হতে হয় সরকারকে। আগামীতে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে সরকার আগে থেকেই শক্ত অবস্থান নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে প্রভাবশালী দেশ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক চাপ এসেছে। পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাহারই শুধু নয় এই সেতু যাতে না হয় সে ব্যাপারেও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিক থেকে চেষ্টা ছিল। কিন্তু সরকারের শক্ত অবস্থানে তা সম্ভব হয়েছে। আগামীতেও সরকারের এই অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানান।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কূটনীতিকদের সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাংবিধানিক বিষয় নিয়ে বিদেশিদের কথা বলা ভালো মনে করি না। এক সময় এসব নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু সেসময় আর এখন এক নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে এমন কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি যে তাদের মতামত দিতে হবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কূটনীতিকরা দেখা করতে চেয়েছেন, এটা রাষ্ট্রপতি দেখবেন তিনি দেখা করবেন কিনা।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭
এসকে/আরআর/আইএ