এতোদিন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সরব উপস্থিতি থাকায় প্রতিপক্ষ ছাত্রসংগঠনগুলো তেমন সক্রিয় না হতে পারলেও এখন প্রকাশ্যে শোডাউন করছে তারাও।
জানা যায়, প্রায় সাড়ে চার বছর পর জবি শাখা ছাত্রলীগের আয়োজিত সম্মেলনে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
কিন্তু তার এই নির্দেশ না মেনে ওইদিন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুইভাগে বিভক্ত হয়ে জবি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। যার ফলে সেদিন আর কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
পরবর্তীতে সম্মেলন আয়োজনের দু’দিন পরেই অনলাইনে ভাইরাল হয় জবি ছাত্রলীগের প্যাড জালিয়াতি করে গঠিত ভুয়া কমিটি। যদিও শেষমেষ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা বিষয়টি খোলাসা করেন। কিন্তু এর আগেই বেশ জল ঘোলা হয় বিষয়টি নিয়ে। কারণ এই কমিটিকেই অনেকে সত্য মনে করে ঘোষিত সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদকে শুভেচ্ছা বার্তা জানাতে থাকেন। এতো কিছুর পরেও প্রায় তিন সপ্তাহ চললেও এখনো ঘোষণা করা হয়নি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটের নতুন কমিটি।
এদিকে, জবি ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার সুযোগে এরই মধ্যে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছেন অন্য ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যে ছাত্রদল গত কয়েক বছর জবি ক্যাম্পাসে সেভাবে দলীয় কোনো কর্মসূচি পালন না করতে পারলেও তারা আবার পুনরায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে দলীয় কর্মকাণ্ড শুরুর চেষ্টা করছেন। তবে এখনো সক্রিয় কোনো কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছেনা জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন শিবিরকে। কিন্তু তারাও যেকোনো সময় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে বা গোপনে বড় আকারের কর্মকাণ্ড চালাতে পারে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
জবি ছাত্রলীগ কর্মী জনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখন ক্যাম্পাসে কোনো ধরণের রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। ক্যাম্পাসে মূলত ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের আন্ডারে থাকার কারনে অন্য কেউ এখানে প্রকাশ্যে আসেন না। এখন ক্যাম্পাস পুরোপুরি নীরব, কোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউনের অস্তিত্ব নেই জবিতে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। কমিটিতে যারা পদ পাওয়ার মতো ছিল তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে এ ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই জবি ছাত্রলীগ নতুন নেতৃত্ব পাবে।
এছাড়া ক্যাম্পাসে ছাত্রদল বা অন্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করতে চাইলে তা জবি শাখা ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রতিহত করবে বলেও জানান তিনি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ইচ্ছে অনুযায়ী কমিটি দিতে বাধ সাধছেন ছাত্রলীগের সিন্ডিকেটের সদস্যরা। সম্ভাব্য কমিটিতে বাদ পরেছেন তাদের অনুগত কর্মী তাই তাদের পছন্দের প্রার্থীদের বাদ পড়াকে ভাল চোখে দেখছেন না তারা। তাই ইচ্ছে থাকলেও জবি ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করতে পারছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
ডিআর/জিপি/বিএস