যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারী দু’টি গ্রুপে ১৮ জন সভাপতি ও ২২ জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করছেন। এসব প্রার্থীরা যশোর শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিজেদের প্রার্থীতা জানান দিতে পোস্টার, প্যানাসাইন টানিয়েছেন।
কাউন্সিলরদের কাছে হাজির হয়ে নিজের পক্ষে দোয়া ও সমর্থন চাইছেন। তবে, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ইলেকশন না কি সিলেকশনের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে সেটি নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। বিগত সম্মেলনে সহিংসতার হওয়ায় এবার সতর্ক সবাই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সম্মেলন উপহার দিতে তৎপর রয়েছে আয়োজক ও আইন-শৃংখলা বাহিনী সদস্যরা।
এদিকে, দীর্ঘ ছয় বছর পর কাঙ্খিত এ সম্মেলন উপলক্ষে গত ২ জুন ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, ৫ জুলাই বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত (সম্মেলনের আগের রাত) প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটি।
সূত্র জানায়, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদ পাওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। অনেকে বিবাহিত। অনেকে ছাত্রত্ব হারিয়েছেন বেশ আগেই। আবার অনেকের নামে রয়েছে একাধিক মামলা। এনিয়ে জেলা ছাত্রলীগের মধ্যে বিবাদমান দু’টি পক্ষের একটি অপরটির নেতাদের ত্রুটিগুলো সংগ্রহ করছেন। তবে, নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটি সম্মেলনের আগের দিন রাতেও চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে না পারায় সম্মেলনের সফলতা নিয়ে নানামুখি জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক জামাল হোসেন শিমুল বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছয় বছর পর সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এনিয়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূলের দাবি গণতান্ত্রিক পন্থায় নেতৃত্ব নির্বাচন করা। সেই লক্ষ্যে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। ’
এক প্রশ্নের জবাবে জামাল হোসেন শিমুল বলেন, ‘একটি টেকনিক্যাল কারণে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তবে, আগামীকাল (১০ জুলাই) সম্মেলনের আগেই তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। ’
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নিয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘সফলভাবে সম্মেলন শেষ করতে সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ করেছি আমরা। ইতোমধ্যে ৫২৭ জন কাউন্সিলরের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অতিথিদের নামের তালিকা ধরে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে সম্মেলন শেষ হবে।
যশোর কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। সম্মেলন উপলক্ষে অতিরিক্ত আড়াই’শ পুলিশ মোতায়েন করা হবে। একই সঙ্গে সিসি ও ভিডিও ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। শহরের মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চলবে। এছাড়াও নিয়মিত টহল চালু রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার সকাল ১০টায় শহরের ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন উদ্বোধন করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ।
সম্মেলনে উদ্বোধন করবেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সোহাগ ও প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন উপস্থিত থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৭
ওএইচ/