শুক্রবার (২১ জুলাই) গণভবনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগে কারা অনুপ্রবেশ করছে, কার মাধ্যমে দলে ঢুকেছে তাদের একটা তালিকা তৈরি করে জমা দিতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কিছু লোক আওয়ামী লীগ হয়ে দলে ঢুকে, তারপর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়ে দল ও সরকারকে বিব্রত করেন। এদের বিষয়ে সাবধানে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যারা বিভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে আসে তারা পদ নিতে আসেন। তারা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে আসেন, অপকর্ম করেন এবং দল ও সরকারের ক্ষতি করেন।
অনুপ্রবেশকারী কীভাবে দলে প্রবেশ করে ও পদ পায় তা জানতে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সূত্র জানায়, কাউকে দলের নেওয়ার আগে তার সর্ম্পকে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দল ভারী করে বদনাম কেনার দরকার নেই।
অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অনুপ্রবেশকারীদের শুধু দলেই নেয়া হয়নি। তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদও দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে আগৈলঝাড়ার সাবেক ও বর্তমানে বরগুনা সদরের ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) গাজী মো. সালমান তারিকের বিরুদ্ধে বরিশাল জেলা আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজুর মামলা বিষয়টি তুললে দলের অনুপ্রবেশকারীদের প্রসঙ্গে আলোচনা উঠে আসে।
সাজুর বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সাজু কে? দলে তার অবদান কী?
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সাজুকে দল থেকে বহিস্কারের নির্দেশ দেন।
মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এরই মধ্যে সাজুকে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এডভোকেট ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সংগঠন থেকে কেন চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এতদবিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব আগামী ১৫ (পনের) কার্যদিবসের জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নিকট ভবিষ্যতে কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি বিষয়ে আলোচনা হয় বলে সূত্র জানায়।
নির্বাচনে প্রস্তুতি যথাযথ ভাবে নেওয়া হচ্ছে না বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে নেতাদের কাছে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের জন্য যেভাবে প্রস্তুতি নেয়া দরকার সেভাবে নেওয়া হচ্ছে না। আপনারা কী প্রস্তুতি শুরু করেছেন। কোনো কার্যক্রম তো দেখছি না।
নেতাদের নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে যাওয়া এবং সারা দেশের খোঁজ খবর রাখার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এখনই প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে দলীয় প্রধান বলেন, সামনে সিটি করপোরেশেন নির্বাচন। এখনই প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। কিন্তু সেভাবে প্রস্তুতি দেখছি না।
লন্ডন সফরে থাকা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
বৈঠকে বলা হয়, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। বিএনপি ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে প্র্রচার করছে এবং সেগুলো বিভিন্ন দূতাবাসে দিচ্ছে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
এসকে/এমইউএম/এমজেএফ