রোববার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে খালেদার বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাদের এ মন্তব্য করেন। এর আগে বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলের প্রধান খালেদা জিয়া।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে খালেদার নির্বাচন দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে, সারা পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে যেভাবে হয় সেভাবে। সে সময় যে সরকার থাকবে, তারা ইসিকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে সহায়তা দেবে।
খালেদা জিয়া নির্যাতিত-অত্যাচারিত হয়েছেন উল্লেখ করে নির্যাতনকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে যে কথা বলেছেন, সে প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, জুলুম আওয়ামী লীগ করেনি, জুলুম করেছে বিএনপি। এটা দেশের জনগণ জানে।
এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্যাতিত-নিপীড়িত হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর রক্তের দাগ খালেদা জিয়ার হাতে। জুলুম তিনি করেছেন, অথচ তিনি আজও জাতির কাছে ক্ষমা চাননি।
খালেদা জিয়া হাওয়া ভবন গড়ে তুলে লুটপাট চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করেছেন, পুড়িয়ে মানুষ মেরেছেন। তার কৃতকর্মের জন্য তাকেই জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
খালেদা জিয়া এখন ক্ষমার নাটক করছেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি জানেন, তিনি যে মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন, তা আওয়ামী লীগ দেয়নি। তারই তৈরি করা লোকজন (১/১১ সরকার) মামলা দিয়েছে। খালেদা জিয়া জানেন, হয়তো এসব মামলায় তার দণ্ড হয়ে যেতে পারে। এজন্য তিনি ক্ষমার নাটক সাজিয়েছেন।
সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়— প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিদেশ থেকে পদত্যাগের দিকে ইঙ্গিত করে খালেদার এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের কেউ প্রধান বিচারপতির মতো একজনকে পদত্যাগ করাবে, এটা মনে করা হাস্যকর।
নির্বাচনে ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার বন্ধে খালেদার আহ্বানের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। কিন্তু খালেদা এটা চান না। তিনি ২০০১ সালের মতো মেকানাইজড (যান্ত্রিক) নির্বাচন চান। তার মন্তব্য ইতিবাচিকভাবে দেখছি। তবে এটা ইসির ব্যাপার।
নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে খালেদার দাবি প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগও নির্বাচনে সেনাবাহিনী চায়। তবে সেটা আইন অনুযায়ী।
খালেদা ১০ বছরের মতো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেন, তিনি সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে কয়টা নির্বাচন করেছেন?
প্রতিক্রিয়া প্রদানকালে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/