মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে মহানগরের সাগরপাড়া বটতলা এলাকায় বিএনপির গণসংযোগস্থলে ওই ককটেল বিস্ফোরণ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচনের প্রচারণার শুরুর প্রথম দিন থেকেই বিএনপিআচরণবিধি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগ করে আসছে। এটি তাদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এটি তারা সর্বত্রই বলেন। যে ক’টি নির্বাচন হয়ে গেল, সবক’টিতে তারা একই কথা বলেছে।
‘বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু সোমবার রাজশাহীতে আসার পর আমরা লক্ষ্য করলাম, একটা প্রচার সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ে যে, দুলু শহরের প্রান্তসীমায় একটি হোটেলে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে একটি মোটা অংকের টাকা লেনদেন হচ্ছে বা হবে। এটি জানাজানি হয়ে যাওয়ার কারণে স্থান পরিত্যাগ করে তিনি পর্যটন মোটেলে অবস্থান নেন। এই কালোটাকা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্যে এসেছে এবং একহাত থেকে আরেক হাতে গেছে-এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই’।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি নেতা দুলু সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত পর্যটন মোটেল থেকে লন্ডনে অবস্থানরত (বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন) তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমার কাছে এখন মনে হয়, ওইখান থেকেই হয়তো নির্দেশ এসেছে, এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে ও আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে একটা ঘটনা ঘটাতে হবে। তারই অংশ হিসেবে আজকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ২-৩ টা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
‘আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা শান্তি চাই। ক্ষমতাসীন হয়েও আমাদের নেতাকর্মীরা কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন না। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, তা মেনে নেওয়ার মন-মানসিকতা আমার তৈরি আছে। তাদেরও তৈরি থাকা উচিত। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারীসহ সর্বস্তরের ভোটাদের মধ্যে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এটি দেখে বিএনপি আতঙ্কিত। তারা মনে করছে, এখানে জয়ী হতে না পারলে সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। ’
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বলেন, আমার পরিষ্কার বক্তব্য, আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবো। আমাদের কোনো নেতাকর্মী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করবো না। আমি প্রতিপক্ষকে অনুরোধ করছি, তারা দ্রুত এসব অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিহার করে জনগণের রায়কে মেনে নিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রচার করুন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন বলেন, বিএনপির ঘরে আগুন, অার দ্বন্দ্ব। বিএনপির অন্তর্কলহ ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাদের আজকের পথসভায়। বিএনপির এখানে কে কোন গ্রুপ তা আপনারা সবাই জানেন। আমাদের কাছে খবর আছে, দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের কাছ থেকে রাজশাহীর একজন নেতা দেখা করে এসেছেন। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এবং নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্যে তারা পথ খুঁজছেন।
‘রাজশাহীর উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে সবাই খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে এসেছেন। তাই এখন বিএনপি পথ খুঁজছে কিভাবে পালিয়ে যাওয়া যায়। এই কারণে দুলু সাহেবেরা ষড়যন্ত্র করছেন। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করে বের করার। ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুল আলম লোটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হুদা রানা ও উপ-প্রচার সম্পদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
এসএস/এইচএ/