ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

সাত সভাপতি-নয় সম্পাদকের ঐতিহ্যবাহী আ’লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
সাত সভাপতি-নয় সম্পাদকের ঐতিহ্যবাহী আ’লীগ সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও ওবায়দুল কাদের

ঢাকা: প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাতজন আর সাধারণ সম্পাদক নয়জন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া দলটির সভাপতি হিসেবে সর্বোচ্চ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রচীন দল আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। পশ্চাৎপদ ও ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে জন্ম নেওয়া পাকিস্তানে পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন পুরান ঢাকার কেএন দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এ দলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এরপর মুসলিম লীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে নতুন দল গঠন করেন।

তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ দলটি প্রতিষ্ঠার প্রায় চার বছর পর ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ নামে বাঙালির অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রামের ব্রত নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।

দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সভাপতি হয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ আটবার নির্বাচিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুইবার এবং এএইচএম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন ৭৫ পরবর্তী পরিস্থিতিতে একবার দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

দলের অপর গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ পদ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন নয়জন। সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ চারবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান।

এছাড়া তাজউদ্দিন আহমেদ তিনবার, আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দুইবার করে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, আবদুল জলিল এবং ওবায়দুল কাদের একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

পাকিস্তান আমলে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রতিনিধি ছিল মাত্র ৩০০ জনের মতো। এ সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। পরে প্রতিনিধিদের সমর্থনে ৪০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এ সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৭ থেকে ৮ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রথম এবং সবমিলিয়ে নবম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সার্কিট হাউজ রোডে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠন এবং পুনর্বাসনসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের শপথ নিয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এরপর ১৯৭৪ সালের ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি ১১২, সার্কিট হাউজ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ১০ম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে একটি সিদ্ধান্ত হয় যে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা দলের পদে থাকতে পারবেন না। ফলে বঙ্গবন্ধু দলীয় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর দলের সভাপতি হন এএইচএম কামারুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক হন জিল্লুর রহমান।

৭৫’র মর্মান্তিক ঘটনার পর আওয়ামী লীগের ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালে দলের ১৩তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দলের ঐক্য ধরে রাখার জন্য এ সম্মেলনে তার অনুপস্থিতিতেই তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দলের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এখন এ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এসকে/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।