ঢাকা: প্রশাসনে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের চিহ্নিত করে ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অন্তত সাড়ে চার হাজার নাম এই নতুন তালিকায় স্থান পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয় এ তালিকাটি তৈরি করছে।
সূত্র জানায়, এতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দায়ের করা বিভিন্ন মামলার তথ্য উপাত্ত গুরুত্বের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
২০০৪ সালে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া দুর্নীতি দমন ব্যুরোর আমল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যে সব সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর নামে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ এনে মামলা হয়েছে তাদেরকেই এ তালিকাভ’ক্ত করা হবে।
দুর্নীতি দমন ব্যুরো অধিকাংশ মামলাই এখনো অমিমাংসিত অবস্থায় রয়েছে ।
দুদক সুত্র জানায়, কমিশন গঠনের সময় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ব্যুরোর আমলের অনেক মামলাই অমিমাংসিত অবস্থায় ছিল। এর মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে চার্জ গঠনের অপেক্ষায় ছিল এমন মামলাগুলোর অভিযুক্তদের নাম নতুন তালিকাভূক্ত করতে এরই মধ্যে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে।
তবে এ তালিকার অনেকেই এরই মধ্যে অবসরে গেছেন।
এসব কর্মকর্তা-কর্মাচারির অধিকাংশের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ কর ফাঁকি, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, সরকারের টাকার ক্ষতি সাধন, শুল্ক ফাকি, জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাত, ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ, দরপত্র অনিয়মসহ বিভিন্ন ধরনে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীই রয়েছেন এ অভিযুক্তদের তালিকায়।
সূত্র মতে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাস্টমস, কর বিভাগ, বন অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সাব-রেজিস্ট্রার, কানুনগো, টেলিফোন বোর্ড, গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউক, ব্যাংক, সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা কর্মচারী।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডাটাবেজে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা পুরোনো মামলাগুলোর তালিকা নতুন তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে তথ্য তুলে ধরা হবে।
সূত্র জানায়, ডাটাবেজ তৈরির ব্যপারে দুদক এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ডাটাবেজ তৈরি হলে অভিযুক্তরা আর পার পাবে না। ’
সঠিকভাবে তালিকা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময় পদোন্নতিসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নেয় জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ডাটাবেজ তৈরি হলে অভিযুক্তদের সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। ’
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৪৫১ ঘণ্টা অক্টোবর ২৫, ২০১০