ঢাকা: বাবা তুমি যেখানে যাও আমাকে নিয়ে যেও, বাবা বজলুর রশীদের (৪২) কাছে ছোট মেয়ে বর্ণালী (৮) সব সময় এ কথা বলতো। বর্ণালীর কথা রেখেছেন বাবা।
শুক্রবার দুপুরে নিজ বাসায় ছোট মেয়ে বর্ণালীকে গলা চেপে হত্যার পর ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেন ব্যাবসায়ী বজলুর রশীদ। এসময় তার স্ত্রী বড় মেয়ে বনিয়াকে নিয়ে কোচিংয়ে গিয়েছিলেন।
রাজধানীর দক্ষিণ খান আশকোনা মেইন রোডসংলগ্ন ১১ নম্বর লেনের ৬৯৫ নম্বর বাসায় দুই মেয়ে আর স্ত্রী নাদিরা আক্তারকে (২৯) নিয়ে থাকতেন ব্যাবসায়ী বজলুর রশীদ। দুই মেয়ে সিভিল এভিয়েশন উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।
বজলুর রশীদ তার এক আত্মীয়ের সিঅ্যান্ডএফ এর লাইসেন্স নিয়ে বিমানবন্দরে ক্লিয়ারিং ফরোয়াডিং এর ব্যবসা করতেন। ব্যবসা করতে গিয়ে আর্থিক সঙ্কটে পড়েন তিনি। চিন্তায় মাঝে মাঝে ঘর থেকে বের হতেন না।
নিহত বজলুর রশীদের স্ত্রী নাদিরা আক্তার বলেন, “সকাল সাড়ে ১০টায় বড় মেয়ে বনিয়াকে নিয়ে কোচিং সেন্টারে যাই। এসময় বর্ণালীকে রেখে ঘরে তালা দিয়ে নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য বলি। বেলা পৌঁনে ১টায় বাসায় ফিরে দেখি বর্ণালী মেঝেতে পড়ে আছে আর স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। ”
তিনি জানান, পার্শ্ববর্তী লোকজন পুলিশকে খবর দিলে দক্ষিণ খান থানা পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
নিহত বজলুর রশীদের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর থানার গুটিয়া গ্রামে। ১২ বছর ধরে তিনি আশকোনার ওই বাড়িতে থাকতেন।
বজলুর রশীদের ছোট ভাই তরিকুল ইসলাম বলেন, “আমার বড় ভাই খুব চাপা স্বভাবের ছিলেন। কোনো সমস্যা থাকলেও কাউকে কিছু বলতেন না। ”
উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, এটা আত্মহত্যার ঘটনা। কারণ আশপাশের লোকজন ও ঘটনার পারিপার্শিকতা দেখে বোঝা যায়, প্রথমে মেয়েকে হত্যার পর বাবা বজলুর রশীদ আত্মহত্যা করেছেন। ”
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ খান থানায় একটা অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৩
জেএস/ সম্পাদনা: জয়নাল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর/জেডএম