ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

মানবাধিকার কমিশনের নতুন স্থায়ী জনবল কাঠামো

অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে এ সপ্তাহেই

তুহিন শুভ্র অধিকারী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১১
অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে এ সপ্তাহেই

ঢাকা: কমিশনের কার্যক্রমে গতি বাড়াতে নতুন স্থায়ী জনবল কাঠামো অনুমোদন করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সরকারি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবটি এ সপ্তাহেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।



প্রায় ৮৮ জনের এ নতুন জনবল কাঠামোতে থাকবেন সাত জন পরিচালক। বর্তমান কাঠামোতে পরিচালক আছেন মাত্র দুই জন।

এ সম্পর্কে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘শনিবার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সভায় নতুন এ স্থায়ী জনবল কাঠামো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাঠামোতে সাত জন পরিচালকের পদ রাখা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘বৈঠকে মোট ৮৮টি পদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে একজন পরিচালকের স্টাফ সংখ্যা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই মোট সংখ্যা বাড়তে পারে। এ সপ্তাহের মধ্যেই আমরা আমাদের এ প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। ’

উল্লেখ্য, কমিশনের বর্তমান ২৮ সদস্যের একটি জনবল কাঠামো প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাভ করলেও তাদের নিয়োগ বিধিমালা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বর্তমানে কমিশনে ১৪ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন, যার মধ্যে চারজন সরকার থেকে পাঠানো। বাকিদের ইউএনডিপি এবং আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি আমিরুল কবির ১২৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ জনবল কাঠামো গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি ছাঁটাই করে বর্তমানে কমিশনের জনবল সংখ্যা ২৮ এ নিয়ে আসে।

নতুন কাঠামোতে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও জনসংযোগ বিষয়ক, গবেষণা, নীতি ও আইন বিষয়ক, অভিযোগ, পর্যবেক্ষণ ও মধ্যস্থতা বিষয়ক, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক, ব্যাবস্থাপনা, প্রশাসন ও অর্থ বিষয়ক, তদন্ত বিষয়ক এবং ক্যাপাসিটি বিল্ডিং বিষয়ক পরিচালক থাকবেন। এদের প্রত্যেকের অধীনে একজন করে উপ-পরিচালক থাকবেন।    

বর্তমান জনবল কাঠামোতে কেবলমাত্র ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন ও অর্থ বিষয়ক এবং অভিযোগ, পর্যবেক্ষণ ও মধ্যস্থতা বিষয়ক পরিচালক আছেন। এছাড়া একজন সচিব এবং একজন উপ-পরিচালক আছেন। একজন পরিচালক বর্তমানে ছুটিতে বিদেশে আছেন।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘জনবলের অভাবে কমিশনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। আশা করছি নতুন জনবল কাঠামো অনুমোদন হলে কমিশনের কাজে গতি আসবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও নেপালে কমিশনের জনবল সংখ্যা অনেক বেশি। ভারতে প্রায় সাড়ে তিন শ’ এবং নেপালের কমিশনে প্রায় এক শ’ জনবল রয়েছে। অথচ আমাদের বর্তমান জনবল কাঠামো মাত্র ২৮ জন। তাও আবার এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। ’

এদিকে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘এ কাঠামো অনুমোদন হলে কমিশনের কাজের গতি অনেক বেড়ে যাবে। এ কাঠামো অনুমোদনের পর কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করা হবে। ’

দীর্ঘদিনের দাবির মুখে রাষ্ট্রপতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন-২০০৭ অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন, যা ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। একজন চেয়ারম্যান ও দু’জন সদস্য নিয়োগের মাধ্যমে ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর কমিশন গঠিত হয়।

এরপর ২০০৯ সালের ৯ জুলাই বর্তমান সরকার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন- ২০০৯ সংসদে পাশ করে। মানবাধিকার কমিশনের অধ্যাদেশে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কেবলমাত্র বিচারক দিয়ে পূরণের কথা বলা হয়। কিন্তু নতুন আইনে অন্য পেশার জনবল দিয়ে এসব পদ পূরণের বিধান রাখা হয়। যে কোনো রাষ্ট্রীয় বা সরকারি প্রতিষ্ঠান মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে তা তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া হয় কমিশনকে।

গত বছরের ২২ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরই সঙ্গে অন্য ছয়জন সদস্য নিয়োগের মাধ্যমে কমিশনকে পুনর্গঠন করা হয়। কমিশনের অপর সদস্যরা হলেন কাজী রিয়াজুল হক (সার্বক্ষণিক সদস্য), ড. নিরু কুমার চাকমা, সেলিনা হোসেন, ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যারোমা দত্ত ও নিরূপা দেওয়ান।

বাংলাদশে সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।