সোমবার (০২ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির।
এ সময় দেশে কার্যরত সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এস এম মনিরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ডেপুটি গর্ভনর রাজী হাসান বলেন, ঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি কার্যকরে এখন আর কারো কোনো দ্বিমত নেই।
‘কয়েকটি ব্যাংক ইতোমধ্যে ঋণের সুদ এক অংক বাস্তবায়ন করেছে। আর যেসব ব্যাংক এখনও করেনি তারাও এ সপ্তাহে করবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছে। ’
জানা গেছে, ঋণের সুদহার কমানোর জন্য বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা গত ২৫ জুন অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় স্বল্প সুদে সরকারি আমানত পাওয়ার জন্য গর্ভনরের কাছে নিশ্চয়তা চেয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে গভর্নর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সিইও’রা ৬ শতাংশ সুদে বেসরকারি ব্যাংকে আমানত রাখতে সম্মত হয়েছেন। ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৬ শতাংশ সুদে সরকারি আমানত সংগ্রহ করতে পারবে।
বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, গর্ভনর ঋণের সুদহার এক অংকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আবার এটি কার্যকর করতে গিয়ে যাতে কোনো নৈরাজ্য বা অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি না হয় সেদিকেও সজাগ থাকতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, এজন্য যদি ঋণ আমানতের নির্ধারিত হারে কিছুটা ছাড় দিতে হয় তা বাংলাদেশ ব্যাংক দেবে। তবে কোনো ব্যাংককে শাস্তি বা জরিমনা না করার জন্য অনুরোধ করেছেন ব্যাংকের এমডি’রা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এটি সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে কার্যকর করতে হবে।
এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, আমানতের সুদহার পুনঃনির্ধারণ করার পর কিছু আমানত চলে গেলে তা সহনীয়ভাবে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ছাড় কেবল এক অংকে ঋণের সুদ হার কার্যকর করার জন্যই। যদিও এটি রাতারাতি কার্যকর হবে না, সময় লাগবে। আমাদের কেউ কেউ কার্যকর করেছে। বাকিরাও করবে। আমার ব্যাংক সব ঋণের সুদ এক অঙ্কে করবে। বাকিদের সিদ্ধান্ত হবে তাদের বোর্ডে।
‘আমরা সঞ্চয়পত্রের সুদহার পর্যালোচনা করতে অনুরোধ করেছি। এটি নিয়ে কাজ চলছে। যখনই হোক সঞ্চয়পত্রের সুদহার কিছুটা কমবে। এছাড়া বড় ঋণ বিতরণে নিয়মের ব্যতয় যাতে না ঘটে সেদিকে সর্তক থাকতে, প্রবাসী আয় বাড়ানোর ব্যাপারেও ব্যাংকগুলাকে নজর দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া কীভাবে আরো বৈদেশিক বাণিজ্য জোরদার করা যায় সে ব্যাপারেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ’
চলতি বছরের শুরু থেকে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট শুরু হলে ঋণ ও আমানতের সুদ হার বেড়ে যায়। অনেকে ১১ শতাংশেও আমানত সংগ্রহ করে। এতে ঋণের সুদহার ১৭-১৮ শতাংশ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। বিনিয়োগ বাড়াতে ঋণের সুদ এক অংকে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৮/আপডেট: ২১৩৯ ঘণ্টা
এসই/এমএ