রোববার (২২ জুলাই) গুলশানে ব্যাংকের নবনির্মিত প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’-এ এমন মন্তব্য করেন ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী রেজা ইফতেখার। তিনি অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক প্রেসিডেন্ট।
ইবিএল এমডি বলেন, একটি ব্যাংকের সবচেয়ে বড় স্টেপ হচ্ছে রেটিং। বাংলাদেশ সরকারের রেটিং হচ্ছে বিএ ৩। বাংলাদেশের প্রথম ইবিএল’র রেটিং হচ্ছে বিএ ৩।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট একটি মাইলফলক। কারণ একটি ইন্টারন্যাশনাল বডি বাংলাদেশে এসে তিনমাস অবস্থান করে প্রত্যেকটি জিনিস যাচাইয়ের পর রেটিং করে। যেহেতু আমরা ইন্টারন্যাশনাল মুডির মাধ্যমে রেটিং করিয়েছি, সেহেতু আমাদের রেটিংটা স্টেবল ফর লাস্ট ইয়ারস।
‘এর ফলে আমরা এখন দেশের বাইরে গিয়ে বন্ড ছাড়তে পারি। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে বন্ড ছাড়ার ক্ষমতা আমাদের আছে। আর্ন্তজাতিক ফোরামে গিয়ে বলতে পারি আমাদের রেটিং বিএ ৩। আমরা বন্ড ছাড়তে চাই। আমি মনে করি বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে এই বন্ড মার্কেটটি এখনো বিকশিত হয়নি’।
ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং রেগুলেশনে আমরা গত বছর বেস্ট রিটেইল ব্যাংকিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি উল্লেখ করে ইবিএল এমডি বলেন, ইউরোমানি পরপর তিন বছর আমাদের ‘বেস্ট ব্যাংক ইন বাংলাদেশ’ বলেছে। এরকম প্রচুর অ্যাওয়ার্ড আমরা পেয়েছি।
ইবিএল এমডি আরো বলেন, বাংলাদেশের এখন ৩০টির মতো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের জন্য একটি সার্টিফিকেশন দরকার। যাকে বলে পেমেন্ট কার্ড ইন্ডাস্ট্রি ডাটা সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড (পিসিআইডিএসএস)। এই সার্টিফিকেট ইবিএল ছাড়া বাংলাদেশে আর একটিমাত্র ব্যাংকে আছে। প্রতি বছর এই সার্টিফিকেট নিতে হয়। বাকি যেসব ব্যাংক বাজারে কার্ড নিয়ে এসেছে তাদের কারও এই সার্টিফিকেশন নেই।
ইস্টার্ন ব্যাংক ব্যবসা শুরুর পর্যায়ে এসে ইন্টারন্যাশনাল কার্ড সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট শতভাগ ফলো করে। এসব করার কারণ হচ্ছে যারা ভবিষ্যতে ব্যবসা করবেন তারা যেন জানেন এই ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা করলে কি কি সুবিধা, কি কি অসুবিধা।
২০১৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে যেসব ব্যাংক ব্যাসেল-৩ পাঁচটি পিলার পূরণ করেছে ইবিএল তাদের একটি। আমাদের খেলাপি ঋণ মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশি এবং বিদেশি কোন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এতো কম নয়। ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণ সামান্য একটু বাড়লেও আমাদের বাড়েনি। আমাদের ব্যবসার প্রবৃদ্ধি যাই হোক, আমরা যেন সেটা ধরে রাখতে পারি, টেকসই হয়, এটিই হচ্ছে আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য।
২০০২ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশে অনলাইন ব্যাংকিং চালু করি। অনলাইন হয় দু’টি, একটি ব্যাক অফিস আরেকটি ফ্রন্ট অফিস। অনেক ব্যাংক ফ্রন্ট অফিসে অনলাইন চালু করলেও ব্যাক অফিসে তাদের ম্যানপাওয়ার নেই। এই কাজটি আমরা করেছি ২০০২ সালেই। এখনো বাংলাদেশের অনেক প্রাইভেট ব্যাংক পুরোপুরি অনলাইনে যেতে পারেনি।
ব্যাংকিংখাতকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচকগুলো ভালো প্রকাশ করলে ব্যাংকিংখাতের জন্য মঙ্গল হবে। প্রধান কার্যালয় নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ সর্ম্পকে বলেন, বাংলাদেশি প্রযুক্তি, ডিজাইন ও আসবাবপত্র দিয়ে তৈরি করা। এতে কর্মকর্তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৮
এসই/জেডএস