কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের আগস্ট শেষে দেশে কার্যরত ৫৮টি ব্যাংকের সারাদেশের শহর এবং গ্রামাঞ্চলের শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৪৩ টিতে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ছিল নয় হাজার ৪০টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০ হাজার ১৪৩টি শাখার মধ্যে গ্রামাঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে চার হাজার ৯০৯টি শাখার এবং শহরে কার্যক্রম চালাচ্ছে পাঁচ হাজার ২৩৪টি শাখা।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৭৪১টি, বিশেষায়িত ব্যাংকের শাখার সংখ্যা এক হাজার ৪১২টি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার সংখ্যা চার হাজার ৯২২টি এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৮টিতে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে ব্যাংকগুলো গ্রামাঞ্চলের ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম প্রসারিত করে চলেছে।
সেবার বাইরে থাকা মানুষদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে এর আগে একটি নীতিমালা জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালায় বলা হয়, শাখা খোলার ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ গ্রামের নির্দেশনা রয়েছে। যেমন শহরে একটি শাখা খোলা হলে গ্রামেও একটি খুলতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন- বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং সেবা গ্রামে পৌঁছানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আর এসব গ্রামাঞ্চলের ব্যাংক শাখাগুলো গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও গ্রামীণ অর্থনীতির প্রসারতা দিতে কৃষি ও গ্রামীণ খাতে ঋণ সরবরাহের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই ব্যাংকিং খাত গ্রামীণ অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধিতে যে অবদান রেখেছে, তা দেশের সামগ্রিক জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপস্থিতি ছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম গ্রামীণ এলাকায় আর্থিক লেনদেনের বিপ্লব ঘটিয়েছে। বর্তমানে ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
দেশে বর্তমানে ৫৮টি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরমধ্যে ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক, তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংক, ৪০টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও নয়টি বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে আমরা আশা করছি- খুব শিগগির সেবার বাইরে থাকা দেশের তৃণমূলের মানুষও ব্যাংকিং সেবার আওতায় চলে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
এসই/টিএ/এসআইএস