ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

গুলশানে হামলার ঘটনায় খালেদার নিন্দা

পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৬
গুলশানে হামলার ঘটনায় খালেদার নিন্দা বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া

ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিজান রেষ্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া।

 

শনিবার (০২ জুলাই) দুপুর সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ নিন্দা জানান।


 
খলেদা জিয়া বলেন, ‘শুক্রবার (০১ জুলাই) দিবাগত রাত থেকে শনিবার (০২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত দুস্কৃতিকারীদের কর্তৃক সংঘটিত প্রাণবিনাশী ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্ট অগণতান্ত্রিক সংস্কৃতি মিলে মিশে দেশে এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে যা পৈশাচিক স্বৈরতন্ত্রে অধ:পতিত হয়েছে। যার বিকৃত প্রতিক্রিয়া সারাদেশে ফুটে উঠতে শুরু করেছে। দুস্কৃতিকারীদের নির্মম রক্তাক্ত অভ্যূত্থান দেশে বিরাজমান দু:শাসনেরই বহি:প্রকাশ।

তিনি বলেন, আমরা বারবার উগ্রবাদীদের অমানবিক রক্তঝরা অশুভ পরিকল্পনা মোকাবেলা করার জন্য দলমত নির্বিশেষে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার আমাদের সেই আহ্বানকে উপেক্ষা করে বরং বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রতি বিষদগারেই ব্যস্ত থেকেছে। প্রকৃত জঙ্গি দমনে কোনো ধরনের ইতিবাচক তৎপরতা দেখানো তো দুরে থাক, বরং বিএনপিকে অভিযুক্ত করতে ব্লেমগেম খেলতে গিয়ে সরকার জঙ্গিদের স্বাস্থ্যবর্ধন করেছে। কিছু দিন আগে জঙ্গি দমনের নামে সরকারি অভিযানের যে ভয়াবহ রূপ জনগণ দেখলো, তাতে আমরা তখনই বলেছিলাম-সরকারের এই নৃশংস ক্র্যাকডাউন বিএনপির বিরুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু সরকার এই নির্মম পুলিশি অভিযান চালানোর সময় দেশব্যাপী প্রায় ষোল হাজার মানুষকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে চার হাজারেরও অধিক ছিল কেবল বিএনপির নেতাকর্মী। বাদ বাকি অধিকাংশ মানুষই ছিল নিরীহ জনসাধারণ।

তিনি আরো বলেন, রমজান মাসের শুরু থেকেই সরকারের অভিযানে গ্রেফতার ও বন্দুকযুদ্ধের নামে মানুষ হত্যা থেমে থাকেনি। সরকার প্রধান ও সরকারের লোকজন জঙ্গিবাদ দমনের নামে বেআইনী বিচারবহির্ভূত হত্যাকে জায়েজ করে বক্তব্য রেখে যাচ্ছে। এতো কিছুর পরও জঙ্গিদের বিবেকবর্জিত অপতৎপরতা থামাতে পারেনি সরকার। গতকাল ঝিনাইদহে শ্যামানন্দ দাস নামে একজন সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। আইএস এর দায় স্বীকার করেছে। সুতরাং পুরোহিত শ্যামানন্দ দাসকে কুপিয়ে হত্যা এবং রাতে গুলশানের লোমহর্ষক মানুষ জিম্মি ঘটনায় প্রমাণিত হলো-সরকারের সপ্তাহব্যাপী ক্র্যাকডাউনের উদ্দেশ্য ছিল বিএনপি দমন, জঙ্গীবাদ দমন নয়। আমি দুস্কৃতিকারীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত শ্যামানন্দ দাসের আত্মার শান্তি কামনা ও পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। গণমাধ্যম ও সংবাদ কর্মীদের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা নিপীড়ণমূলক ব্যবস্থা জারি রেখে গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে গিয়ে দেশে অমানবিক সভ্যতা বিধ্বংসী শক্তির উত্থান ঘটেছে। দেশে বিদ্যমান বহুমাত্রিক স্বৈরতান্ত্রিকতার কারনেই আনাচে কানাচে উগ্রবাদ বাসা বেঁধেছে।

গুলশানে রেষ্টুরেন্টের ঘটনা উগ্রবাদী দুস্কৃতিকারীদের কর্তৃক বিদেশি নাগরিকসহ বিশ জনের মতো মানুষকে জিম্মি করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদেরকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ফলে সৃষ্ট প্রাণবিনাশী ঘটনা অন্ধ হিংস্রতা ও বিকৃত রুচির পশুপ্রবৃত্তি। আমি আবারো সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি-এই নিষ্ঠুর বিবেকবর্জিত গণতন্ত্র ও সভ্যতা বিরোধী উগ্রবাদী শক্তিকে নির্মূল করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৬
বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।