সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনকালে এ জবাব চান তিনি।
ফখরুল বলেন, বর্তমান অর্থমন্ত্রী বলেছেন বিদেশিদের চাপে ইসলামী ব্যংকের ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে।
নাগরিকদের ন্যূন্যতম অধিকারও নেই অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশে দুই ধরনের আইন চালাচ্ছে। তাদের জন্য এক আইন, আমাদের সাধারণ নাগরিকদের জন্য আরেক আইন। ছাত্রদলের জন্য এক আইন, ছাত্রলীগের জন্য আরেক আইন।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সব সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তাহলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত থেকে প্রশিক্ষিত কুকুর আমদানি করা হয়েছে সীমান্ত পাহারা দেওয়ার জন্য। এতে আমাদের সমস্যা নেই। প্রতিদিন খবর পাচ্ছি সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষগুলোকে হত্যা করা হচ্ছে। কুকুর আমদানি করা হচ্ছে, কিন্তু মূলকাজটা তো করতে হবে। সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা তো বন্ধ করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বাভাবিক কার্যক্রমের সুযোগ দেওয়ার দাবি করে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি উপলক্ষে ৭ জানুয়ারি ঢাকায় আমাদের সমাবেশ ছিল, করতে দিলো না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সমাবেশের জন্য অনুমতি নিতে হয়। এই সরকার আমাদের কোনো কার্যক্রমেরই অনুমতি দিচ্ছে না।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, অনেকে বলে বিএনপি নির্বাচনের ট্রেন মিস করেছে, অনেক বড় ভুল করেছে। কিন্তু কেন বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তা সবার জানা। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রয়োজন। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও নিরপেক্ষ সরকারের জন্য ১৭৩ দিন হরতাল-অবরোধ করেছিল। এখন তারা বলছে কিছুই করেনি। তারা এখন ধোয়া তুলসি পাতা।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নাকি দুর্বল হয়ে গেছে। তবে তাকে দেখে এতো ভয় কেন? তাদের কর্মসূচি করতে দেয় না। অথচ আওয়ামী লীগ নিজেদের ইচ্ছেমতো সমাবেশ করছে। এরশাদকে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপির নেতারা সমাবেশ বা মিছিল করতে গেলেই মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
কর্মসূচি দিয়ে পিছিয়ে পড়া বিএনপির কোনো দুর্বলতা কিনা- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব বলেন, আপনারা এ ধরনের প্রশ্ন করলে আমি মাঝেমাঝে চিন্তায় পড়ে যাই- এ প্রশ্নের উত্তর কী হবে? তবে কি আমরা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করবো? এটা তো উস্কানিমূলক প্রশ্ন। সরকারও বিএনপিকে উস্কানি দিতে চাইছে। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতান্ত্রিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান চাই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, টিআইবির তথ্য অনুযায়ী ৩ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হচ্ছে প্রভাষক নিয়োগে। এছাড়া বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতিতে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে।
গত কয়েক বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর অনুপাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পাসের হার কমে যাওয়ার প্রসঙ্গটি তুলে ধরে তিনি বলেন, এ ফলাফল থেকেই বোঝা যায় দেশে শিক্ষার মান কতোটা নিচে নেমে গেছে।
এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৭
জেডএফ/এইচএ/