বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘সাউথ এশিয়া ইয়ুথ ফর পিচ অ্যান্ড প্রোসপারিটি সোসাইটি’ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
সাউথ এশিয়া ইয়ুথ ফর পিচ অ্যান্ড প্রোসপারিটি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক সাজ্জাদুল হকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভারত একটি যুদ্ধবাজ রাষ্ট্র। তারা প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে অতীতে যুদ্ধ করেছে। আবার যদি তারা যুদ্ধ করে, তাহলে এই চুক্তির কারণে বাংলাদেশ সেখানে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য। কিন্তু আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। ভারতের কারণে কোনো দেশের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ করতে চাই না।
সুতরাং এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো সামরিক চুক্তির প্রয়োজন নেই। এ ধরনের চুক্তি করার আগে জনগণের মতামত নেওয়া প্রয়োজন। আমি সরকারকে অনুরোধ করব একটি গণভোট নেন, বাংলাদেশের জনগণ ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তি চায় কি না?
শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আপনার পিতা কোনো দিনও ভারতের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করতেন না। আপনি ভারতের সঙ্গে কেবল দু’টি চুক্তি করে আসুন। একটি হলো তিস্তা চুক্তি। আরেকটি হলো বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করবে না, সেই চুক্তি। এই দু’টি চুক্তিই কেবল বাংলাদেশের স্বার্থে। আর কোনো চুক্তিই বাংলাদেশের স্বার্থে নয়।
‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা পানি’ উল্লেখ করে হাফিজ বলেন, ভারত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তারা আমাদের পানি দেবে না। বাংলাদেশও কখনো পানির ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিতে পারেনি। কেবল জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে ভারতকে চাপ দিয়ে পানি চুক্তি করতে পেরেছিলেন। তার পর আর কেউ এ ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারেনি।
ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এত বোকা নন। উনার প্রজ্ঞা আছে, অভিজ্ঞতা আছে, দেশ প্রেম আছে। সুতরাং আমরা আশাবাদী হতে পারি, উনি সামরিক চুক্তি করবেন না। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার পরামর্শ হলো- প্রধানমন্ত্রী অন্তত এই চুক্তি করে আসবেন, বিএসএফ আমাদের সীমান্তে আর গুলি চালাবে না। যদি চালায় খুনি হিসেবে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া ভারতে যে ২০ কোটি সংখ্যালঘু আছে, তারা যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারেন। কাশ্মির সমস্যার একটা যৌক্তি সমাধানের ব্যাপারেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী কথা বলে আসবেন- বলেন জাফরউল্লাহ চৌধুরী।
সেলিমা রহমান বলেন, আমরা শুধু জানতে চাই, ভারতের সঙ্গে আমাদের উঞ্চ সম্পর্ক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে? উঞ্চ সম্পর্ক মানে কি সীমান্তে মানুষ হত্যা, নদীগুলো শুকিয়ে ফেলা? নাকি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় রেখে দেওয়া।
তিনি বলেন, আমরা জানি ১৯৯৬ সালে গঙ্গা চুক্তির সময় তিস্তা চুক্তির কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু আজ পযর্ন্ত নানা উসিলায় তিস্তা চুক্তি হয়নি। বরং তারা অনেকগুলো নদীতে বাঁধ তৈরি করে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৭
এজেড/জেডএম