ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‘শিক্ষার সব উদ্দেশ্য আজ ভূলুণ্ঠিত’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
‘শিক্ষার সব উদ্দেশ্য আজ ভূলুণ্ঠিত’ সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের কার্য্ক্রমের সমালোচনা করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, শিক্ষা মানুষকে গণতন্ত্রের প্রতি, ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু বর্তমান সরকার শিক্ষার এই মৌলিক লক্ষ্যকে পদদলিত করেছে। মোদ্দাকথা শিক্ষার সব উদ্দেশ্য আজ ভূলুন্ঠিত।

শনিবার (১৩ মে) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘পরিবর্তনের জন্য শিক্ষা’ স্লোগান সামনে রেখে বিএনপি দিনব্যাপী এ সেমিনার আয়োজন করে।

সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ সেমিনার শেষ সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায়।

আত্মতুষ্টি’র কারণে পাসের হার বাড়িয়ে শিক্ষার ক্রমাবনতি ঘটানো হয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, একথা আজ স্বীকার করতে হবে যে, আত্মতুষ্টির কারণে পাসের হার বাড়িয়ে আমাদের শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটেছে।

মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যার বয়সভিত্তিক কাঠামো যেভাবে বদলে যাচ্ছে তা মোকাবেলায় মূল কৌশল হবে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রয়োজনীয় সেতুবন্ধন রচনা করা।

খালেদা জিয়া বলেন, অগ্রসর জ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ও শিক্ষার মাধ্যমে মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। মানবসম্পদ উন্নয়নের ব্যবহারিক জ্ঞান, তাত্ত্বিক জ্ঞান, প্রায়োগিক ও তাত্ত্বিক গবেষণাসহ সব ধরনের জ্ঞান চর্চার মধ্যে ভারসাম্য অর্জন করতে পারলে পরিবর্তন সাধন করা সম্ভব।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হলে প্রশিক্ষণ ও সংগঠনের মাধ্যমে জনশক্তিতে পরিণত করলে এটা একটা পাওয়ার হবে। প্রেসিডেন্ট জিয়ার এই চিন্তাকে মাথায় রেখে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শিক্ষাকে ঢেলে সাজিয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে অনেক কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি।

জন ইচ্ছার প্রতিফলনে আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি শিক্ষা ব্যবস্থাকে জনকল্যাণমুখী করবে- এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন- শুধুমাত্র ডিগ্রি প্রাপ্তির মোহ থেকে দেশের তরুণদেরকে মুক্ত করতে হবে। সামর্থ, মেধা, ও চিন্তার জগতে পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের নিশ্চিত ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। পেশাগত ও কারিগরি শিক্ষা, প্রকৌশল বিদ্যা, চিকিৎসা বিদ্যা, বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞানের মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা, শত শত ধরনের ট্রেড ও পেশার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানবসম্পদকে বিকশিত করতে পারে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসললাম ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সমাপনী অধিবেশনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ শিক্ষা দর্শন বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করেন।

প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর’র। কিন্তু শারিরীক অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

সেমিনারের উদ্বোধনী পর্বে মোট চারটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার উপরে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও শাহ শামীম আহমেদ।

দ্বিতীয় অধিবেশনে শিক্ষায় বিভিন্ন ধারার উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান।

তৃতীয় অধিবেশনে উচ্চ ও প্রাগ্রসর শিক্ষা উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো ভিসি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান।

চর্তুর্থ অধিবেশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সাব্বির মোস্তফা এবং শাহজালাল বিজ্ঞাপ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকবাল।

সমাপনী অধিবেশনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭/আপডেট ১৮১২ ঘণ্টা/আপডেট ২৩৩০
এজেড/এইচএ/এসআরএস


আরও পড়ুন
** শিক্ষায় জিডিপির ৫ ভাগ চায় বিএনপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।