ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‘চোখ অন্ধ করে তার স্বপ্ন চুরমার করে দেওয়া হয়েছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
‘চোখ অন্ধ করে তার স্বপ্ন চুরমার করে দেওয়া হয়েছে’

ঢাকা: ঢাকার কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজনের আহত হওয়ার বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ছোটবেলা থেকে দিনমজুরি করে ওই শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন তার বড় ভাই। পড়াশোনা শেষে ভাল চাকরি পেয়ে পরিবারের হাল ধরার কথা ছিল তার। কিন্তু পুলিশ তার চোখ অন্ধ করে দিয়েছে, তার স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে। 

শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকার শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে বিভিন্ন আলোচনাসহ সাম্প্রতিক ইস্যুগুলোতে অবস্থান জানাতে নিয়মিত এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

রিজভী বলেন, শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে গুলি, লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনায় উল্টো পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। এটি নজীরবিহীন এবং দেশকে অন্ধকারের গুহায় ঠেলে দেওয়ার দৃষ্টান্ত।  অথচ সেদিন পুলিশের হামলা, গুলি, লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেটে আহত হয়েছে প্রায় ২০ শিক্ষার্থী। আটক করা হয়েছে ১৩ কলেজ শিক্ষার্থীকে।  

বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করেন, পুলিশের গুলিতে তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের দুই চোখের মণি গলে গেছে। এখন তিনি দুই চোখে কিছুই দেখেন না বলে তার পরিবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।  তার বড় ভাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর বহু কষ্টে দিনমজুরি করে তার লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি। পড়াশোনা শেষে ভাল চাকরি পেয়ে পরিবারের হাল ধরার কথা ছিল তার। কিন্তু পুলিশ তার চোখ অন্ধ করে দিয়েছে, তার স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে। ’

রিজভী বলেন, আসলে বিনাভোটের সরকার বর্তমানে এতটা আতঙ্কিত যে, সামান্য মিছিল বা বিক্ষোভ দেখলেই ভয় পায়, আঁতকে ওঠে।  

ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের অস্ত্রবাজি ও দখলবাজিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মূমুর্ষ হয়ে পড়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, পত্রিকার পাতা খুললে বা টেলিভিশন খুললেই দেখি তাদের অস্ত্রবাজি আর খুনোখুনির দৃশ্য কিংবা ছাত্রীদের লাঞ্ছিত হওয়ার খবর। দু’তিন আগে সিলেট বিয়ানীবাজার কলেজে তাদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে।

সরকার দলীয় এক এমপির বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যার ঘোষণা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এ ঘোষণায় বিরোধী রাজনীতিকেরা আতঙ্কে পড়েছেন। এখন সেই সংসদ সদস্য যতোই বক্তব্য প্রত্যাহার করুন না কেন, তিনি থলের বিড়াল বের করে দিয়েছেন। এতে প্রমাণ হলো, এতোদিন ধরে বর্তমান সরকারের জীবনবিনাশী রক্ত আর লাশ ফেলার কর্মসূচির বিষয়ে বিরোধী দলের অভিযোগ যথার্থ।  

বিএনপির সিনিয়র নেতা ও দলের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যকে উদ্ধৃত করে চেয়ারপারসন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিউজ সাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু অনলাইনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অপপ্রচারমূলক। মূলতঃ সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির লোকেরা দলের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য এ ধরণের মিথ্যা, ভিত্তিহীন মনগড়া অসত্য তথ্য প্রচার করছে বা বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশ করাচ্ছে।  

বিএনপির সদস্য নবানয়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলার অভিযোগ তুলে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
এএম/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।