বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি (ফার্নেস) তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হলে খরচ আরও কমবে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ-জ্বালানি এখন লুটের খাত। সরকার পছন্দের লোকদের দিয়ে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্রজেক্ট করিয়েছে। ওইসব প্রজেক্টে জনগণের দেয়া ট্যাক্স থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। তাতেও কূল পাচ্ছে না। এখন আবারও দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গরিবকে আরও গরিব বানাতে চাচ্ছে সরকার।
গত দেড় বছরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ৮০ শতাংশের বেশি। কিন্তু দেশে এখন পর্যন্ত কমানো হয়নি। এমনকি সরকার কমানোর কথা ভাবছেও না। ফলে দাম কমার সুবিধা থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে।
রিজভী বলেন, বর্তমানে দেশে প্রতি লিটার অকটেনের উৎপাদন খরচ ৫০ টাকারও কম। সরকার বিক্রি করছে ৯৯ টাকা। পেট্রলের উৎপাদন ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যেও ব্যবধান প্রায় একই রকম। সরকার দেশে ডিজেল বিক্রি করছে ৬৮ টাকা লিটার। অথচ ডিজেলের আমদানি মূল্য পড়ছে প্রতি লিটার ৪০ টাকার কম। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস তেল সরকার বিক্রি করছে প্রতি লিটার ৬২ টাকা। ক্রয়মূল্য বর্তমানে ২৫ টাকার মতো।
রিজভী বলেন, বিদ্যুতের সঙ্গে সব কিছু সম্পর্কিত। ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম আরো বৃদ্ধি পেলে সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব। এমনিতে সরকারের লুটপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোন বিনিয়োগ নেই। এমন সময় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে। এতে গোটা অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। আবার শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে দ্রব্যমূল্যও।
তিনি বলেন, নিত্যপণ্যসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এর মাশুলও দিতে হবে সাধারণ ভোক্তাদের। এমনিতেই মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের আকার স্ফীত থেকে স্ফীততর হচ্ছে। এর ফলে নির্দিষ্ট আয় ও পেশার মানুষের কষ্ট ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। এরপর আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ব্যয়ভার স্ফীত করার মাধ্যমে দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, সরকার একের পর পর জনবিরোধী কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এমন বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি মেনে নেয়া হবে না। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে জনবিরোধী এ উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।
এ সময় সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ, সমসাময়িক রাজনীতি ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৭
জেডএম/