রোববার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ১০ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের অসংখ্য পরিবার অসহায় হয়ে গেছে। তাদের সন্তান, পরিবার, সদস্য হারিয়েছে। সিলেটে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর সন্তান এখনো কাঁদে। প্রতিবছর ঈদের দিন তারা দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে, এই বুঝি তাদের বাবা আসবে, তাদের সঙ্গে ঈদ করবে।
বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ সরকার’ মন্তব্য করে ফখরুল আরো বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে, মানবাধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়ে, শুধুমাত্র শক্তির জোরে তারা ক্ষমতায় টিকে আছে। তাদের এ কাজে যারাই প্রতিবাদ করছে হয় তারা গুম হচ্ছে, না হয় খুন হচ্ছে।
‘আজকে খবরের কাগজ পড়লে দেখতে পারবেন ফরহাদ মজহারকে কিভাবে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। তিনি ৫ মাস পর তার বর্ণনা দিয়েছেন। তাকে গুম করার চেষ্টা করা হয়েছিলো’।
ফখরুল আরো বলেন, শুধু ফরহাদ মজহার নয়, কয়েকদিন আগে একজন রাষ্ট্রদূত নিখোঁজ হয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক উৎপল, রাজনৈতিক নেতা কেউ ফিরে আসেননি।
এসময় তিনি দলের করা একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, শুধুমাত্র বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৭৮ হাজার ৩২৩টি, আসামির সংখ্যা ৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৮ জন, মোট খুনের সংখ্যা ৫২০, অপহরণের সংখ্যা ৬৪৭। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ১৫৭ জন, নির্যাতনের শিকার ৩৭ লাখ মানুষ।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সারাদেশে হত্যা, গুম, খুন, মামলায় জর্জরিত, একটি পরিবার নেই যারা হয়রানির শিকার নয়।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারপনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের পক্ষে সানজিদা ইসলাম প্রমুখ।
রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, আজকে দেশে কথা বলার অধিকার নেই, সমাবেশ করার অধিকার নেই। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আজকে এ মানববন্ধন বন্ধেও সরকারের কতো আয়োজন। আজকে চোরকে বলতে হবে সাধু, মিথ্যুককে বলতে হবে সত্যিবাদী, মিথ্যাকে বলতে হবে সত্য।
এসময় তিনি সরকারের গুম, হত্যা, খুন, লুটপাটের জন্য সামনে ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
ড. মঈন খান তার বক্তব্যে বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের মানুষকে গুম করে, হত্যা করে যে নির্যাতন করা হয়েছে তাতে দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার গুম হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এসআইজে/জেডএস