এ নিয়ে দলের মহানগর নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ চরমে উঠেছে। তাদের প্রশ্ন, এবারও কি ব্যর্থ হবে মহানগর বিএনপি? বর্তমান নেতৃত্বও কি আব্বাস-খোকার পথ অনুসরণ করবেন?
তাদের আশঙ্কা, অবিলম্বে ঢাকা মহানগরীর ইউনিটগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা না গেলে সরকারবিরোধী আন্দোলন, সাংগঠনিক কার্যক্রম ও পরবর্তী সকল নির্বাচনের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হবে, যা দলের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, কেন্দ্র ও ঢাকা মহানগরের নেতৃত্বে ভাঙন সৃষ্টির ভয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারছেন না তারা। এর বড় কারণ, উত্তর-দক্ষিণের নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সর্বশেষ গত ১৮ নভেম্বর রাতেও দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকে নেতাদেরকে দ্রুত অভ্যন্তরীণ সংঘাত মিটিয়ে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। সে সময়ে বলা হয়, একমাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গড়া হবে। কিন্তু আটমাস পার হয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির মুখ দেখেননি নেতাকর্মীরা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ভিন্ন ভিন্ন বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের নির্বাহী কমিটির আংশিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের আংশিক কমিটি অনুমোদন করা হলো। শর্ত থাকে যে, আগামী একমাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে অনুমোদন নিতে হবে’।
ওইদিন এম আবদুল কাইয়ুম ও আহসান উল্লাহ হাসানকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও কাজী আবুল বাশারকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
উত্তরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটিতে ২৩ জন সহ সভাপতি, ১৪ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (২৬ ও ২৭ নম্বরে কারো নাম নেই), ১৮ জন সহ সাধারণ সম্পাদক, ৩ জন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একজন করে কোষাধ্যক্ষ, দফতর সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক ও প্রকাশনা সম্পাদকের নাম রয়েছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণে ৭০ সদস্যের আংশিক কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৬ জন সহ সভাপতি, ১৮ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১৭ জন সহ সাধারণ সম্পাদক, ৩ জন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একজন করে দফতর সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদকের নাম রয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, ‘শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়ে দিবো। ইতোমধ্যে আমরা মহানগর, থানা, ওয়ার্ডের নেতাদের সঙ্গে বসেছি। আশা করছি, তাড়াতাড়ি সকল কমিটি সম্পূর্ণ হবে’।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান বলেন, ‘আশা করছি, পূর্ণাঙ্গ কমিটি চলতি মাসেই ঘোষণা করা হবে। বাছাই প্রক্রিয়া চলছে। এক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা থাকলেও প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। বলতে গেলে ৯০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এএম/এএসআর