ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

নির্বাহী কমিটির সভায় যা প্রত্যাশা বিএনপির

অন্তু মুজাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৮
নির্বাহী কমিটির সভায় যা প্রত্যাশা বিএনপির হোটেল লা মেরিডিয়ান/ ছবি: ইসমাইল হোসেন

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের আগে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। নির্বাহী কমিটির বৈঠক থেকে আগামী নির্বাচন ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দল পরিচালনার করণীয় সম্পর্কেও দিক-নির্দেশনা আসবে। এমনটাই প্রত্যাশা দলের সিনিয়র নেতাদের।

আগামী বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্র্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। রায়কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া।

বৈঠকে দলের নেতা-কর্মীসহ জোটের নেতৃবৃন্দকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও সরকারের অবস্থান কী হবে তা পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি।

মামলার রায়ের আগে শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় হোটেল লা মেরিডিয়ানে দীর্ঘ দুই বছর পর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভা শুরু হচ্ছে।  নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা নির্বাহী কমিটির বৈঠক থেকে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামসহ নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা আসবে। এমনকি খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দল পরিচালনাসহ মামলার রায় পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নানা দিক তুলে ধরবেন দলীয় প্রধান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে সদস্যরা চলমান রাজনৈতিক নানা বিষয়ে চেয়ারপারসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা, আগামী নির্বাচন ও মামলার রায় নিয়ে কথা বলবেন। ম্যাডামের নির্দেশনায় হবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আগামী দিনের পথচলা।

দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নেত্রী বক্তৃতা করবেন বলে সারা দেশ থেকে আগত নেতা-কর্মীরা উদগ্রিব হয়ে আছেন। তবে আশঙ্কা আছে সভা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কিনা। কেননা ইতোমধ্যে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  

এ প্রসঙ্গে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল যখন প্রয়োজন তখন নির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান করে। দেশের এই রাজনৈতিক সংকটকালীন মুহূর্তে নির্বাহী পরিষদের সভা গুরুত্ব বহন করে। আগামী দিনের কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা হবে সভায়।  

নির্বাহী কমিটির সদস্য আসাদুল করিম শাহিন বলেন, এটাই প্রথম মিটিং হতে যাচ্ছে, যদিও দেরিতে। কারণ, সরকারের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে খালেদা জিয়া মামলার হাজিরা দিতে দিতে আর কোনো কাজই করে উঠতে পারছেন না। আগামী দিনের কর্মকৌশল নির্ধারণে নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এটা যেহেতু দিক-নির্দেশনামূলক সেহেতু দলের চেয়ারপারসন এবং সিনিয়র নেতারা আগামী দিনের কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন। কীভাবে দল সামনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে তাও আলোচনায় আসবে।

বিএনপির শিক্ষা বিয়ষক সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের রোষানলে পড়ে ম্যাডামকে অসুস্থ অবস্থায় আদালতে দৌড়াতে হচ্ছে। নেতা-কর্মীরা সপ্তাহের সাত দিনেই আদালতের বারান্দায়। যার কারণে কমিটির মিটিং হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘদিন পরে হলেও যে মিটিং ডাকা হয়েছে আশা করছি তা সফল হবে। আর খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। ম্যাডামকে যদি রাজনৈতিকভাবে সাজা দেওয়া হয় তাহলে দলের নেতা-কর্মীরা তা মেনে নেবে না। আমরা আশা করি সুন্দর পরিবেশে নির্বাহী কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে নেত্রী আগামী দিনের দলের কর্মকৌশল নিয়ে দিক-নির্দেশনা দেবেন।

দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, নানা প্রতিকূলতার কারণে মিটিংয়ের সময় হয়ে ওঠেনি। তবে একটা বড় ব্যাপার যে কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে। আমাদের কমিটি অনেক বড়। অনেক দেরিতে হলেও দলের জন্য এটার দরকার ছিল। এ বৈঠকের পরে নেতা-কর্মীরা আরো উদ্বুদ্ধ ও চাঙ্গা হবে।  

তিনি বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্রে টুকটাক পরিবর্তন হলেও হতে পারে। যা ইসিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। সবকিছুই আগে ঠিকঠাক করা হয়েছিল কিন্তু পাশ করার জন্য একটা কোরাম লাগে, সেজন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। কারণ, আমরা সরকারের দুরভিসন্ধি জানি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৮
এএম/এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।