ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

বিএনপি

এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ফখরুল সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পাশে অন্য নেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মীদের ভোটকেন্দ্রের আশে-পাশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজন দাঁড়াতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের মারধর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এই হলো আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু ও চমৎকার নির্বাচন।

মঙ্গলবার (১৫ মে) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এ কথা বলেন। কেসিসিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকেই নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ তোলে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। খুলনা সিটি নির্বাচনে আবারও প্রমাণ হলো এ সরকার ও ইসির অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। তাই আমাদের ও জনগণের দাবি নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

তিনি বলেন, খুলনায় সেনা মোতায়েন থাকলে ফলাফল যাই হোক, ভোট ব্যবস্থা এমন হতো না। বিরোধী দল সুন্দরভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারতো।

গণমাধ্যমকে সরকার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের এ চেষ্টা প্রমাণ হয়েছে, যখন আমরা খুলনা থেকে খবর পাচ্ছি এক ধরনের, কিন্তু সংবাদমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে এক ধরনের এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রচার হয়েছে ভিন্নভাবে। মূলত তারা আসল ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচার করতে দেয়নি।

ফখরুল বলেন, আজ যখন সংবাদ এলো ১টার পর একের পর এক কেন্দ্র দখল হয়েছে। তখন সিইসিকে ফোন করে নির্বাচনে অনিয়মের কথা বলি। তিনি আমাকে বলেন, ‘আপনারা রাজনৈতিক দল, দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন। কোথাও কোনও অনিয়মের ঘটনা ঘটেনি’। আমি যখন বললাম, ‘আমি আপনাকে সোর্স বলছি’। তখন সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ‘কোনও টিভি চ্যানেলে দেখায়নি’। তখন আমি সংবাদমাধ্যমগুলোর নাম বললে তিনি বলেন, ‘আমি দেখছি’। এখনও তিনি দেখছেন। এর আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) আবদুল্লাহ আল নোমানকে আটকের বিষয়ে জানালে তিনি তখনও বলেছেন, ‘আমি দেখছি’। তিনি শুধুই দেখছেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যিনি নিরপেক্ষ সরকারের জন্য আন্দোলন করেছেন, তিনিই ক্ষমতায় এসে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনেছেন, যেন একদলীয় ভোট করে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে।

ফখরুল বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। এমনকি সাবেক সিইসি শামসুল হুদা (ড. এ টি এম শামসুল হুদা) ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশে এখন একটা ফ্যাসিবাদ চলছে, কোনও স্বাভাবিক অবস্থা নেই।  

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে দলের মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া অনেক বেশি অসুস্থ, কিন্তু সরকার এসব বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমরা বারবার সরকারকে বলছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। তাকে মুক্তি দিন। খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে দেশে কোনও নির্বাচন হবে না। কারণ দেশের প্রধান নেত্রীকে মুক্তি না দিলে কিভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? তাই সবার অংশগ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হলে আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।