আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ১৯ আগস্ট বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এরপরপরই পদবঞ্চিতরা দলীয় কার্যালয় দখল করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছিল। ধারাবাহিকতায় পদবঞ্চিত নেতারা তাদের কর্মীদের নিয়ে নব গঠিত ছাত্রদলের কমিটি বাতিল করে পুনরায় কমিটি ঘোষণার দাবিতে শুক্রবার (২৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরের সদররোডস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্র সমাবেশ ডাক দেয়।
ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সুজন, জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ প্রত্যাহারের ঘোষণাকারী সোহেল রাঢ়ী ও পদবঞ্চিত রফিকুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ শুরু হয়। ছাত্র সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত কিছু নেতাকর্মীরাও। ওই সমাবেশে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসানের বিরুদ্ধে বক্তব্যের পাশাপাশি তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবি জানান বক্তারা।
এদিকে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের সমাবেশ চলাকালীন সময়ে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা বরিশাল মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা। এ সময় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এনিয়ে উভয়গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে রুপ নিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে উভয়পক্ষে প্রায় ১০ জন আহত হয়। পরে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ ও লাঠিচার্জে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার সময় ঘটনাস্থল হতে পদবঞ্চিত রিমন নামে একজন ছাত্রদল নেতাকে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে পদবঞ্চিত নেতা বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সুজন এবং পদ প্রত্যাহারকারী জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সাংগঠনিক
সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি প্রভাবিত হয়েছে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি ঘোষণা করেছে। এই কমিটিতে ত্যাগীদের বঞ্চিত করে নিষ্ক্রিয়দের ওপরের পদে দায়িত্ব দিয়েছে।
তারা বলেন, আমরা জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে কমিটি ঘোষণার পর পরই দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলাম। সে অনুযায়ী পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে আমরা ছাত্র সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এতে মহানগর ছাত্রদরের পদবঞ্চিতরাও একাত্ততা প্রকাশ করেন।
বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি জানান, ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী দলীয় কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। আমরা সেখানে গিয়ে তালা ভেঙে সমাবেশ করি এবং দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেই। এছাড়া সেখানে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আর জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বলছেন কমিটি দেওয়া হয়েছে যোগ্যতা অনুসারে। তাই এখানে দোষের কিছু নেই।
এই বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং ঘটনাস্থল থেকে একজনকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে পুলিশও মোতায়ন করা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৮
এমএস/এএটি