খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন। রোববার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বিএসএমএমইউ পরিচালকের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছিলেন তিনি।
শনিবার (৬ অক্টোবর) খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬ তলায় ৬১১ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়। তার আগে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পাঁচ সদস্যের ওই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
রোববার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বোর্ড ৬১২ নম্বর কেবিনে গিয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ফাইল পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা করে। বিএসএমএমইউর মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল জলিল চৌধুরীর নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের অপর চার সদস্য হলেন-ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নকুল কুমার দত্ত।
খালেদার চিকিৎসা নিয়ে আলাপের জন্য বোর্ডের সঙ্গে বসেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক মামুন রহমানও।
তাদের পর্যালোচনার বিষয় তুলে ধরে ব্রি. জে. আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, প্রাথমিকভাবে খালেদা জিয়ার সব কাগজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আপাতত নতুন চিকিৎসা লাগছে না। চলমান চিকিৎসা চলবে। তবে তার চিকিৎসায় গঠিত বোর্ড সোমবার (৮ অক্টোবর) দুপুর ১টায় আবার বসবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ধরনগুলো শুনে কোনো পরীক্ষা লাগলে করা হবে। আমাদের এখানেই তার সু-চিকিৎসা হবে।
মেডিকেল বোর্ডের ২ চিকিৎসককে নিয়ে বিএনপির আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে বোর্ডের কোনো চিকিৎসক বর্তমানে স্বাচিপ বা ড্যাবের কার্যকরি সদস্য হতে পারবেন না। আমাদের গঠিত বোর্ডের কোনো চিকিৎসকও বর্তমানে কোনো সংগঠনে নেই। তাই এটা নিয়ে আপত্তি ওঠা যুক্তিসংগত নয়। তবে বোর্ডের সদস্য সজল ব্যানার্জি জরুরি কাজে বরিশাল থাকায় তার স্থলে বিএসএমএমইউ’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. তাসনিয়া পারভিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি এলে বোর্ডে যোগ দেবেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড পেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি রয়েছেন খালেদা। এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ আরও বেশ ক’টি মামলায় তার বিচারকার্য চলছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ দাবি করে বারবার বিএনপির পক্ষ থেকে তার বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দাবি করা হচ্ছে।
খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করার নির্দেশনাসহ তার চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি রিট করা হয়।
এরমধ্যে আবার গত ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।
পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। যেখানে স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার মত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে যে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে সে হাসপাতালের কথা সুপারিশ করা হয়। সে বিবেচনায় বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
তখন ওই বোর্ড থাকলেও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে সেটা বদলে ৫ সদস্যের নতুন বোর্ড গঠন করা হয় জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন জানান, আগের বোর্ডের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অভিযোগ থাকার কারণে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আর এই বোর্ডে যারা আছেন তারা দেশের সেরা চিকিৎসক।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
ইএআর/এইচএ/
** ২ চিকিৎসক নিয়ে আপত্তি বিএনপির
** খালেদার ফাইল দেখলো মেডিকেল বোর্ড, আবার বসবে সোমবার
** খালেদার কেবিনে মেডিকেল বোর্ড, সঙ্গে ডা. মামুনও
** ডাক্তার মামুন কই? জানতে চাইলেন খালেদা
** রোববার দুপুরে শুরু হবে খালেদার চিকিৎসা