ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

দেড় মাসে ৪১শ’ মামলায় সাড়ে তিন লাখ আসামি, দাবি বিএনপির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
দেড় মাসে ৪১শ’ মামলায় সাড়ে তিন লাখ আসামি, দাবি বিএনপির নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতার্মীদের বিরুদ্ধে গত দেড় মাসে (১ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর) ৪ হাজার ১৮২ মামলায় মোট (জ্ঞাত ও অজ্ঞাতনামা) ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৮ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
 

শনিবার (১৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন রিজভী।

এসময় রিজভী নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে বলেন, শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) মোট ১১টি গায়েবী মামলার এজাহার পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে এজাহারে ১১৭৩ জনকে এবং অজ্ঞাতনামা ২৬৪৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।  ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ১৮২টি মামলা, এজাহারে জ্ঞাত ৮৮ হাজার ৭৭১ ও অজ্ঞাতনামা ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এপর্যন্ত গায়েবী মামলায় বিএনপির ৪ হাজার ৯৭৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অবিলম্বে এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান রিজভী আহমদে।

আওয়ামী লীগ বরাবরই সন্ত্রাসের উর্বর জমি মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, 'তাদের বক্তৃতা, আচরণ, দেশ শাসন সর্বত্রই রক্তাক্ত সন্ত্রাসের চিহ্ন দৃশ্যমান। আওয়ামী সন্ত্রাসের ধারা জেনেটিক্যাল। তারা শুধু গুম, খুন আর ক্রসফায়ারের ব্যাপক বিস্তার ঘটাতে আইন-আদালতকে গড়ে তুলেছে রাষ্ট্রীয় টেররিজমের হাতিয়ার হিসেবে'।

রিজভী আহমেদ বলেন, ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় বিরোধী দলের প্রতি সরকারের আচরণ নিয়ে উচিৎ-অনুচিতের নানা বিষয় রায়ের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরা হয়েছে, সেখানে কিন্তু বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি দেওয়া উচিৎ কিনা সেটা উল্লেখ করা হয়নি।

সরকারের হুকুমে প্রতিদিনই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিনা বিচারে মানুষ হত্যার হিড়িক চলছে অভিযোগ করে বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এ হিড়িক কি উন্নয়নের নমুনা নাকি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস? এগুলো রায়ের পর্যবেক্ষণে না থাকলেও এর দায় তো বর্তমান সরকারের কাউকে নিতেই হবে।  

রুহুল কবির রিজভী বলেন, লক্ষ্মীপুরের বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের হত্যাকারী সেখানকার আওয়ামী পৌর মেয়রের ছেলে বিপ্লব, নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী মন্ত্রীর জামাই, উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন বাবু’র হত্যাকারীরা ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মী। প্রকাশ্য দিবালোকে কিশোর শ্রমিক বিশ্বজিৎ এর হত্যাকারীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। ঔদ্ধ্যতের সীমা অতিক্রম করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এমপিপুত্র রনি রাস্তায় জ্যাম থাকার কারণে সামনের সিএনজি অটোরিকশায় থাকা দু’জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। আবার কয়েকদিন পরপর টেন্ডার দখল ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগরাও নিজেরা নিজেদের লোকদের হত্যা করছে, রক্তাক্ত করছে জনপদ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্রলীগের হাতে রক্তে রঞ্জিত।

কেবলমাত্র আধিপত্য বিস্তার নিয়েই ক্যাম্পাসগুলোতে নিজেরা একে অপরকে হত্যা করেছে। গণমাধ্যমে তথ্যানুযায়ী ছাত্রলীগের হাতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির ভাগাভাগি নিয়ে খুন হয়েছে ২৭ জন।

আ'লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আপনাদের লোকদের কর্তৃক এত খুন-জখমের পরেও কি আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন থাকা উচিৎ? আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘স্বৈরাচারের’ টিকে থাকার মূল ভিত্তিই হচ্ছে সহিংস সন্ত্রাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
টিএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।