সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনালে সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার ঘোষণায় এ কথা জানানো হয়। ইশতেহার ঘোষণা করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দুর্নীতির বিচারে ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে। সংবিধান নির্দেশিত সব দায়িত্ব পালনে ন্যায়পালকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে পুরোপুরি স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেফতারে সরকারের অনুমতির বিধান (সরকারি চাকরি আইন ২০১৮) বাতিল করা হবে।
ঘোষিত ইশতেহারে আরও বলা হয়, অর্থপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা হবে। বর্তমান চলমান কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না। কিন্তু বর্তমান সরকারের শেষ দুই বছরে তড়িঘড়ি করে নেওয়া প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। বর্তমানে চালু থাকা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ব্যয় নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্যাংকিং খাতে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে বলা হয়, ব্যাংকগুলোকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হবে। সরকারি মদদে শেয়ারবাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সঠিক ব্যবস্থা ও প্রণোদনার মাধ্যমে শেয়ার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে শেয়ারবাজারকে তার সঠিক গতিপথে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা দ্রুত করা হবে।
ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে আরও বলা হয়, দেশের ক্রীড়া সংস্থা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির বাইরে পেশাগতভাবে গড়ে তোলা হবে। ভিনদেশি ও ক্ষতিকর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে নাগরিককে রক্ষা করার দৃঢ় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা ও প্রসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদর দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে। এতে আরও বলা হয়, বড় শহরগুলোতে ট্রাফিক জ্যাম নিরসনের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শহরে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবহন নীতি প্রণয়ন করা হবে এবং মানুষের জন্য আরামদায়ক গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে। রেলওয়ে খাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রসারণ করা হবে
ঐক্যফ্রন্ট জানায়, তারা ক্ষমতায় এলে আমূল পরিবর্তন আনা হবে প্রতিহিংসার রাজনীতি দূরীকরণ, নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি দমন ও সুশাসনসহ ১৪টি খাতে।
ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে পরপর দুই মেয়াদের বেশি একজন প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না- এমন ব্যবস্থা করবে। এছাড়া তারা চালিয়ে যাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮
টিএম/এইচএ/