ওই নেতাকর্মীরা বলেন, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় দলের প্রায় প্রতিটি পর্যায়ের নেতাকর্মী জড়িয়ে পড়েছেন। প্রতিটি থানায় একাধিক নাশকতার মামলায় নাম রয়েছে এ নেতাকর্মীদের।
এসব মামলার মধ্যে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির আগে-পরে ‘গায়েবি মামলা’ বলে পরিচিতি পাওয়া মামলাগুলোতে এখনো দলের অনেক নেতাকর্মীই জামিন নেননি। আবার অনেকেই দিনের পর দিন উচ্চ আদালতে ঘুরেও কূল পাচ্ছেন না। দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন যারা অর্থ ও দলীয় আইনজীবীদের সহায়তার অভাবে মামলাগুলো থেকে জামিন নিতে পারছেন না। এসব নেতাকর্মীরা অনেকেই এখন নিজেরা নিজেরা অর্থ ধার করে ও নিজেরা মিলে চাঁদা তুলে মামলাগুলো থেকে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এক্ষেত্রেও দলের জেলা কিংবা মহানগরের কোনো নেতাই পাশে দাঁড়াচ্ছেন না কর্মীদের। আবার অনেক সময় দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা ও তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও সাড়া পাচ্ছেন না নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও থানার বারদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজগর বাংলানিউজকে বলেন, আমার ইউনিয়নে ৫০ জনের ওপরে নেতাকর্মী রয়েছে, যারা এখন নিজ খরচে নিজেদের জামিনের ব্যবস্থা করছি। দল থেকে বা দলীয় আইনজীবীদের কোনো সহায়তা আমরা পাচ্ছি না। তবে আগে মামলায় সহায়তা পেয়েছিলাম। নির্বাচনের আগে-পরের কোনো মামলায় আমরা আইনি সহায়তা পাইনি। আমাদের সবার নামেই প্রায় ৫-৭টি করে মামলা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা অনেকেই মামলায় আসামি হলেও দল থেকে কোনো আইনি সহায়তা পাইনি। দলীয় নেতাকর্মীরাও আমাদের এখন আর খোঁজখবর নেন না। আমরা নিজ খরচে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিচ্ছি। নিজের টাকা খরচ করেই দল করছি ও আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম বলেন, কথা সত্য যে নির্বাচনের পরে একেবারেই দলের নেতাকর্মীদের কেউ খোঁজও নিচ্ছে না, তাদের পাশেও দাঁড়াচ্ছে না। তবে আমাদের অবশ্যই এই দুঃসময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং এটাই আমাদের কাম্য।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, দলীয় আইনজীবীরা টাকা ছাড়া কোনো কথাই বলেন না। এমনকি জামিনের পর আমাদের হাজিরার সময়ও আমাদের কাছ থেকে টাকা রাখেন। এমনটা হওয়া উচিত নয়, আমাদের এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং এই দুঃসময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ হচ্ছে আমরা তাদের জামিনের ব্যবস্থা করাচ্ছি। সবার জামিন তো আর আমার করানো সম্ভব নয়। তবে আমাদের সভাপতি ও আমি চেষ্টা করছি যেন সবার জামিনের ব্যবস্থা করা হয়। হাজারো নেতাকর্মী মামলা খেয়েছেন এটা সত্যি এবং এর মধ্যে অনেকেই আছে যারা জামিনের জন্য সহায়তা পাচ্ছেন না, এটাও সত্যি। তবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা জামিনের ব্যবস্থা করানোর চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৯
এইচএ/