এমনকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গুটিকয়েক নেতার বিরুদ্ধে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির এ ধরনের কিছু ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।
অবশ্য বিএনপির নেতারা এসব প্রশ্নের যুক্তি খন্ডন করেছেন ভিন্নভাবে। তাদের মতে, দলের বাইরেও ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানে তারা দাওয়াত খেতে যান। প্রতিবেশী হিসেবে যান নৌকার প্রার্থীর সমাবেশে।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলায় নাখোশ সিলেট বিএনপির কর্মী সমর্থকরাও।
সূত্র জানায়, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের ১২ উপজেলার ১০টিতে বিএনপির একডজন নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা অবজ্ঞা করে প্রার্থী হওয়ায় ৩২ জন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ বহিষ্কৃতদের একজন সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাজহারুল ইসলাম ডালিম। গত ৩ মার্চ কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে তাকে দলের সব কর্মকাণ্ড থেকে বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা তার সঙ্গে সখ্যতা বজায় রেখে চলেছেন।
শনিবার (৬ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত সিলেট বিএনপির প্রতীকী অনশন শেষে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মাজহারুল ইসলাম ডালিমের বাড়িতে ভুরিভোজে অংশ নেন কেন্দ্রীয় নেতা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেমসহ অনেকে। এ কারণে দলের ভেতরেও কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা। বহিষ্কৃত নেতাকে প্রশ্রয় দেওয়া ও তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ায় কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে জেলা মহানগরের শীর্ষ নেতারা অবজ্ঞা করেছেন বলে মনে করেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরুল হককে জৈন্তপুরে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ উঠে। নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে স্থানীয় লামনীগ্রাম মাদরাসার মাঠে লিয়াকতের পক্ষে জনসভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির এ নেতা। নেতাকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দলে কারণ দর্শাতে হয়নি ওই নেতাকে।
অবশ্য এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আমার প্রতিবেশী। যে কারণে তিনি আমার কাছে ভোটের জন্য গেছেন। কিন্তু জনসভায় গেলেও নৌকার পক্ষে তিনি কথা বলেননি। ’
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘অনশনে কোনো বহিষ্কৃত নেতা ছিলেন না। আর ডালিম যদি উপস্থিত হয়েও থাকেন, তাহলে সাধারণ মানুষ হিসেবে হয়েছেন। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে তার বাড়িতে মেজবানে অংশ নেন বলেন তিনি। ’
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ‘বহিষ্কৃত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সেক্রিফাইস করিনি। তাদের কেউ অনশনে হাজির থাকলেও থাকতে পারেন। কিন্তু বক্তৃতা দিতে দেওয়া হয়নি। আর বহিষ্কৃত নেতার বাড়িতে একটি শিরনীতে অংশ নিতে গিয়েছিলেন তারা। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৯
এনইউ/জিপি