শনিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর ব্রিফিং করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান সাংবাদিকদের।
একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি রয়েছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।
ফখরুল বলেন, আমরা দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য ও তার মুক্তি কামনার বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেসব গণতান্ত্রিক দেশ আছে তাদের অবহিত করবো। অন্যায়ভাবে দেশনেত্রীকে যে আটক করে রাখা হয়েছে, সে বিষয়টা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা জানেন ঈদের আগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের যে বিষয়টা এসেছিল হাইকোর্টে, সেখানে একটা নেতিবাচক আদেশ হওয়ার পর থেকে আমাদের যে ধারণাটা আরও দৃঢ় হয়েছে যে, এখন বিচার ব্যবস্থা আর স্বাধীনভাবে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। সরকার বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। সেক্ষেত্রে আইনিভাবে এটা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে, আমরা ন্যায়বিচার এখানে পাবো কি-না। সে কারণে আমরা দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো। যেহেতু আগস্ট মাসে সরকার কোনো কর্মসূচি নিতে দেয় না সে কারণে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মসূচি আবার শুরু করবো।
মির্জা ফখরুল বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ। সবাই বলছেন যে, আগামী মাসটা নাকি আরও খারাপ যাবে, অবস্থা আরও বাড়বে। দুর্ভাগ্যের বিষয়টা হচ্ছে যে, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর ওষুধ এসে পৌঁছেনি। আমরা গত সভা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম যে, এটার প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে সেটা সরকার করেনি। আপদকালীন একটা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলাম, সেটাও নেওয়া হয়নি। ফলে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আমরা দাবি জানাচ্ছি সম্পূর্ণ বিনা খরচে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য।
কোরবানি পশুর চামড়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের তৎপরতা এবং সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে এর কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, চামড়াশিল্প ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এসব কাজ করেছে। আমরা অবিলম্বে এই শিল্পকে রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে জেলা-মহানগর-উপজেলা পর্যায়ে র্যালি, সভা-সমাবেশ-আলোচনাসভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও তিনি জানান। দলের মহাসচিব বলেন, ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা র্যালি ও পরদিন আলোচনাসভা করবো। এরপরই খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশগুলো সমাপ্ত করবো।
বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় চলা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ফখরুল ছাড়াও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/