ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

জিয়ার সমাধিতে উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লাঞ্ছিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
জিয়ার সমাধিতে উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লাঞ্ছিত

ঢাকা: দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতারা। এর মধ্যে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ও যুগ্ম-সম্পাদক এজিএম শামসুল ইসলামকেও ধাওয়া করেন নেতাকর্মীরা। তবে তারা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে দৌড়ে পালিয়ে যান।

বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে এ ঘটনা ঘটে।

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বিগত দিনে থানা কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, পকেট বাণিজ্য করে সংগঠনকে শেষ করে দিয়েছেন।

এখনো তারা সেই কাজটিই করছেন। এর সঙ্গে নতুন করে আসন্ন (উত্তর) সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচন করতেও বাণিজ্য শুরু করেছেন। তারা কাউন্সিলর নির্ধারণ করতে গিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে প্রত্যেক থানা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা এসব অভিযোগ বিএনপির হাইকমান্ডকে অবগত করলেও কোনো সমাধান হয়নি। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেই এ ঘটনা ঘটে।

নেতাকর্মীরা জানান, গত বছরের ৩ জুন বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই সাংগঠনিক ইউনিটের ২৫টি থানা ও ৫৮টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এমএ কাইয়ুম ও সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান। বিতর্কিত ও অখ্যাতদের দিয়ে পকেট কমিটির অভিযোগ তুলে মহানগর উত্তরের ৬৬ জন নেতার মধ্যে ৩২ জনই অবস্থান নেন ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে। ঘোষিত কমিটির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ লিখিত আকারে তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে দেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছয় দফা বৈঠক ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সবকিছু অবহিত করেন তারা। তবে দলের হাইকমান্ড কোন্দলকে সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্রোহী নেতারা পৃথক ব্যানারে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

তারা জানান, থানা কমিটি গঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতারা পকেট বাণিজ্য করলেও এখন তাদের শোকজ নোটিশ, কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া, কমিটি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার হুমকি-ধমকি দেওয়ার ঘটনায় ওইসব নেতাকর্মীরা সংগঠনের চার নেতার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এর মধ্যে গত ১৭ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতি ওসমান গণী শাহজাহানকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশও দেওয়া হয়।  

শেরেবাংলা নগর এলাকার পাশে হওয়ার কারণে মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতির অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রোববারের ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধদের প্রধান টার্গেট ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, যুগ্ম-সম্পাদক এজিএম শামসুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক এবিএম রাজ্জাক। তবে তারা পালিয়ে যাওয়ায় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুকে কিল, ঘুষি, লাথি মারা হয়, তার পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরে তিনিও দৌড়ে পালিয়ে যান।  

এ বিষয়ে আঞ্জুর বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ঢাকায় বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল মহানগরকে দুই ভাগ করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ৭০ সদস্যের এবং এমএ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা উত্তরের ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপি মহাসচিব।  এর মধ্যে মামলা জটিলতার কারণে এমএ কাইয়ুম মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/

** বিএনপির আন্দোলন চলবে: মির্জা ফখরুল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।