ঢাকা: ধীর গতিতেই চলছে বইমেলা। প্রথম দিন থেকে মোটামুটি ছন্দে থাকলেও অষ্টম দিনে এসে মেলায় কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে।
এদিকে অষ্টম দিন শেষে প্রকাশনার পরিসংখ্যানে মেলা তার নিজস্ব গতিতে চললেও বিক্রিতে হোঁচট খেয়েছে প্রকাশকরা। বইয়ের দাম বাড়ার কারণেই মেলার বিকিকিনিতে এ রকম নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন অনেক প্রকাশক ও প্রকাশনা সংস্থায় কর্মরত বিক্রয়কর্মীরা। তবে এক সপ্তাহ পার হওয়ার পর এখনও প্রকাশনা স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপ-বিভাগের তথ্য মতে, বুধবার মেলায় নতুন বই এসেছে ১১৪টি। আর আটদিনে মেলায় মোট নতুন বই এসেছে ৬৪২টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৬০টি, ১০৮টি, প্রবন্ধ ৩৬টি, কবিতার বই ১৬৮টি, গবেষণা ১১টি, জীবনী ৩৪টি, রচনাবলী ৬টি, নাটক ৬টি, বিজ্ঞান ১৪টি, রাজনীতি ৬টি, অনুবাদ ১১টি, ছড়ার বই ৯টি, শিশুসাহিত্য ২১টি, মুক্তিযুদ্ধের বই ১৭টি, ভ্রমণ ১৫টি, ইতিহাস ২৪টি, চি:/স্বাস্থ্য ৫টি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ৬টি, রম্য/ধাঁধা ২টি, ধর্মীয় ১০টি, সায়েন্স ফিকশন ৭টি ও অন্যান্য ৬৪টি।
প্রকাশনার দিক থেকে মেলার গতি ঠিক থাকলেও বইয়ের বিকিকিনি ঠিক তার উল্টো। অন্যান্য বছর মেলার প্রথম সপ্তাহের বিক্রির রেকর্ডের সঙ্গে এবারের প্রথম সপ্তাহের বিক্রির ঢের পার্থক্য রয়েছে। দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই আসছেন, বইয়ের পসরা সাজিয়ে দোকানিরা ঠিকই বসে আছেন, তবে হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ প্রকাশকরাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যাণের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে অলস সময় কাটাচ্ছেন। প্যাভিলিয়নগুলো ছাড়া স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে প্যাভিলিয়ন ছাড়া মেলায় অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না বলেও মনে করেন বেশ কয়েকজন প্রকাশক।
অন্যদিকে প্যাভিলিয়ন নির্মাণেও নীতিমালা মানছেন না অনেক প্রকাশক। প্যাভিলিয়ন নির্মাণে নীতিমালা না মানতে গত মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেশ কয়েকটি প্রকাশনাকে সতর্ক করে বাংলা একাডেমিতে চিঠিও দিয়েছে বইমেলার জন্য গঠিত টাস্কফোর্স। ক্রেতারা একদিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্য দিক দিয়ে বের হবে প্যাভিলিয়ন নির্মাণে এমন কাঠামো থাকার কথা থাকলেও একমাত্র পাঠক সমাবেশ ছাড়া অন্য কোনো প্রকাশকই প্যাভিলিয়ন নির্মাণে কোনো কাঠামোর তোয়াক্কাই করছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রকাশক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্যাভিলিয়নের কাঠামোর সিস্টেম হচ্ছে একদিক দিয়ে ক্রেতারা প্রবেশ করবে আর অন্যদিক দিয়ে বের হবে। কিন্তু মেলার সবগুলো প্যাভিলিয়ন চার দিক থেকে খোলা। যার কারণে স্টলের মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত কয়েক বছর যাবৎ এ সিস্টেম চলে এলেও মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি ও প্যাভিলিয়ন প্রাপ্ত প্রকাশকরা কোনো কিছু তোয়াক্কা করছে না। সবগুলো প্যাভিলিয়নের কাঠামো পাঠক সমাবেশের প্যাভিলিয়নের মতো হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্যাভিলিয়ন না পাওয়া কয়েকজন প্রকাশক।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
এইচএমএস/আরবি