ঢাকা: মাসব্যাপী বইমেলায় শিশুদের জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছে শিশুপ্রহর। এ বিশেষ দিনে শিশুরা নিজেরা পছন্দ করে কিনছেন বই।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় খুলে দেওয়া হয় বইমেলার প্রবেশ পথ।
শিশুদের জন্য বিশেষ এ আয়োজনে নিজের সন্তানদের নিয়ে বইমেলায় হাজির হয়েছেন অভিভাবকরা। বই কেনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন শিশুদের নিজের পছন্দের ওপর। তারা মনে করছেন, বইমেলায় এসে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই কেনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। নিজে পছন্দ করে বই কিনলে সে বই দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে পড়ে শিশুরা। এর মাধ্যমে শুধু শিশুদের মানসিক বিকাশই হচ্ছে না শিশুর একটি ব্যক্তিগত রুচিবোধও গড়ে উঠছে। যা ভবিষ্যতের লেখক-পাঠক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। শিশুদের উৎসবে পরিণত হয় বইমেলা। হেঁসে-খেলে শিশুরা বই দেখছে আর পছন্দ হলে বইটি কেনার বায়না ধরছে। অভিভাবকরাও এগিয়ে আসছেন নিজ সন্তানের পছন্দের বই কিনে দিতে।
বইমেলায় শিশু প্রহর কেমন ভূমিকা রাখছে এমন প্রশ্নের উত্তরে দুই সন্তানকে নিয়ে বইমেলায় আসা নাকিব কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, শিশুপ্রহর অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে শিশুপ্রহরের জন্য দুই ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা হয়। এ দুই ঘণ্টা সময় খুবই কম। সময় কম হওয়ায় দেখা যাচ্ছে সবাই একসাথে আসছেন এবং ভিড় বেশি হচ্ছে। তাই অন্তত সকাল ৯টা থেকে যদি শিশুপ্রহর শুরু করা যায় তাহলে মেলায় আসা শিশুরা মনোরম পরিবেশ পাবে।
শিশুদের জন্য আলাদা এ আয়োজন থেকে শিশুরা আসলে কেমন উপকার পাচ্ছে জানতে চাইলে নিজ কন্যাকে নিয়ে বইমেলায় আসা আফরোজা খানম বাংলানিউজকে বলেন, শিশুপ্রহর আছে বলেই শুধুমাত্র শিশুদের অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা বইমেলায় আসি। এইযে শিশুদের জন্য আলাদাভাবে আসা, তাদের কেন্দ্র করে বইমেলার সময়টুকু কাটাচ্ছি। তারা নিজেরা নিজেদের জন্য বই পছন্দ করছে এটা অনেক বড় ব্যাপার। এর মাধ্যমে তাদের নিজেদের একটা রুচিবোধ সৃষ্টি হচ্ছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি।
নিজের পরিবারের সঙ্গে বইমেলায় এসেছেন হারুনুর রশিদ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বইমেলার শিশুপ্রহর শিশুদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও ছোট বয়স থেকেই শিশুরা বইয়ের দিকে ঝুঁকছে। অনেক সময় সন্তানদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ দিয়ে আমরা তাদের বই পড়াতে চেষ্টা করি। কিন্তু এর মাধ্যমে তারা বই পড়তে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। এখানে শিশুদের জন্য নানা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সিসিমপুরের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুরা এসব দেখে একটা আনন্দ ঘন পরিবেশে নিজেদের আবিষ্কার করছে আর বইয়ের প্রতি ধাবিত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
এসকেবি/আরআইএস